আ প্যাসেজ টু ইন্ডিয়া

ই এম ফরস্টারের উপন্যাস (১৯২৪)

আ প্যাসেজ টু ইন্ডিয়া (১৯২৪) ইংরেজ লেখক এডওয়ার্ড মরগ্যান ফরস্টার কর্তৃক লিখিত একটি উপন্যাস যেটি ব্রিটিশ রাজ এবং ১৯২০ সালের ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত। উপন্যাসটি মডার্ণ লাইব্রেরি কর্তৃক বিংশ শতাব্দীর ইংরেজি সাহিত্যের ১০০ টি বিখ্যাত কর্মের একটি হিসেবে নির্বাচিত হয় এবং ১৯২৪ সালের জেমস টেইট ব্ল্যাক মেমোরিয়াল প্রাইজ জেতেন। টাইম ম্যাগাজিন উপন্যাসটিকে অন্তর্ভুক্ত করেন “১৯২৩ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ইংরেজি ভাষায় লিখিত ১০০ টি উৎকৃষ্ট উপন্যাস” এর একটি হিসেবে।[১] উপন্যাসটি ফরস্টারের ইন্ডিয়ার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রচিত। ফরস্টার তার এই উপন্যাসের শিরোনাম নিয়েছেন ওয়াল্ট হুইটম্যানের Leaves of Grass কাব্যগ্রন্থের Passage to India নামের একটি কবিতা থেকে।

আ প্যাসেজ টু ইন্ডিয়া
প্রথম প্রকাশের প্রচ্ছদ
লেখকএডওয়ার্ড মরগ্যান ফরস্টার
মূল শিরোনামA Passage to India
দেশইংল্যান্ড
ভাষাইংরেজি
প্রকাশকএডওয়ার্ড আর্নল্ড (যুক্তরাজ্য)
হারকোর্ট ব্রেইস (যুক্তরাষ্ট্র)
প্রকাশনার তারিখ
১৯২৪; ১০০ বছর আগে (1924)
মিডিয়া ধরনমুদ্রণ (হ্যান্ডবুক এবং পেপারব্যাক)
ওসিএলসি৫৯৩৫২৫৯৭

উপন্যাসের গল্পটি চারটি চরিত্রের মাধ্যমে আবর্তিত হয়ঃ ডাঃ আজিজ, তার ব্রিটিশ বন্ধু সিরিল ফিল্ডিং, মিসেস মুর এবং মিস অ্যাডেলা কোয়েস্টেড। মারাবার (বিহারের বারাবার গুহার অণুরূপ)[২] নামক একটি গুহায় ভ্রমণের সময় অ্যাডেলা নিজেকে ডাঃ আজিজের সাথে একটি গুহায় একাকী অবস্থায় পায়, এবং সে ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে গুহা ত্যাগ করে। ধারণা করা হয় যে ডাঃ আজিজ অ্যাডেলাকে শারীরিকভাবে আক্রমণ করার চেষ্টা করেছিলো। আজিজের বিচার এবং এর ফলাফল স্বদেশীয় ইন্ডিয়ান এবং ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ, যারা ইন্ডিয়া শাসন করে, তাদের মধ্যে সব ধরনের জাতিগত উত্তেজনা এবং কুসংস্কার এর উপস্থিতি প্রকাশ করে।

কাহিনী সংক্ষেপ

অ্যাডেলা কোয়েস্টেড, একজন তরুণ স্কুল শিক্ষিকা এবং তার বয়স্কা বন্ধু মিসেস মুর ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার কাল্পনিক শহর চন্দ্রপুর ভ্রমণ করে, এবং বলা হয়ে থাকে যে এটি বিহারের উপশহর পাটনার বাঙ্কিপুর এর অণুরূপ। অ্যাডেলা সিদ্ধান্ত নিতে আসে যে সে মিসেস মুরের ছেলে সিটি ম্যাজিস্ট্রেট রনি হিসলপ কে বিয়ে করবে কি না।

এদিকে, ডাঃ আজিজ, তরুণ ইন্ডিয়ান মুসলিম চিকিৎসক তার দুইজন ইন্ডিয়ান বন্ধুর সাথে বসে খাচ্ছে এবং আলাপ করছে যে ইংরেজদের সাথে তাদের বন্ধুত্ব সম্ভব কিনা এই বিষয়ে। এই সময় মেজর ক্যালেন্ডারের নিকট থেকে আজিজকে তলব করা হয়। মেজর ক্যালেন্ডার আজিজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা যাকে আজিজ বিরক্ত মনে করে। আজিজ নির্দেশ অনুযায়ী খুব দ্রুত ক্যালেন্ডারের বাংলোর দিকে যায় কিন্তু টঙ্গা (এক ধরনের বাহন) পেতে দেরী করায় এবং টায়ারের ত্রুটির কারণে আজিজ পৌছতে বিলম্ব করে, ফলে মেজর ক্ষোভে আগেই চলে যান।

আজিজ আশাহত হয়ে রেল স্টেশনের দিকে হাঁটতে থাকে। যখন সে তার প্রিয় মসজিদ টি দেখে সেখানে সে প্রবেশ করে, মসজিদ টি যদিও জীর্ণ তবুও গঠনশৈলী সুন্দর। সে একজন ইংরেজ মহিলাকে দেখে এবং চিৎকার দিয়ে তাকে এই শুভ স্থানকে অপবিত্র না করার জন্য বলেন। ঐ মহিলাটি, যে কিনা মিসেস মুর, ইন্ডিয়ানদের রীতিকে শ্রদ্ধা করে মসজিদে প্রবেশের পূর্বে জুতা খুলে প্রবেশ করে এবং স্বীকার করে যে মসজিদেও ঈশ্বর আছে। আজিজ তার ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে তার সাথে গল্প করে এবং দুইজনে বন্ধু হয়।

মিসেস মুর সেখান থেকে ফিরে ব্রিটিশ ক্লাবে আসে এবং তার ছেলে রনি হিসলপের কাছে মসজিদে তার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বলে। রনি হিসলপ প্রথমে মনে করেন যে তার মা একজন ইংরেজ সম্পর্কে কথা বলছে, পরে যখন সে প্রকৃত ঘটনা জানতে পারে তখন সে রুষ্ট হয়। রনি মনে করে যে তার মায়ের উচিত ছিলো যে, সে যে একজন মুসলমান সম্পর্কে কথা বলছেন তা আগেই তাকে অবহিত করা। অ্যাডেলাও ইন্ডিয়ানদের প্রতি উৎসুক হয়।

যেহেতু অ্যাডেলা ইন্ডিয়ানদের দেখার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে, ট্যাক্স কালেক্টর মিঃ টারটন অসংখ্য ইন্ডিয়ান ভদ্রলোককে তার বাড়িতে একটি পার্টিতে দাওয়াত করে। কিন্তু পার্টিটি একটি বেখাপ্পা কার্যে পরিণত হয়। অ্যাডেলা সেখানে সিরিল ফিল্ডিং এর সাথে সাক্ষাত করে, যিনি চন্দ্রপুরে ইন্ডিয়ানদের জন্য সরকার পরিচালিত কলেজের প্রধান শিক্ষক। ফিল্ডিং অ্যাডেলা এবং মিসেস মুরকে চা পার্টির দাওয়াত দেন যাদের সাথে হিন্দু-ব্রাহ্মণ নারায়ণ গডবোলও থাকবে, যিনি কলেজের অধ্যাপক। অ্যাডেলার অণুরোধে ফিল্ডিং আজিজকেও ঐ পার্টিতে দাওয়াত করেন।

ফিল্ডিং এর চা পার্টিতে সবাই ইন্ডিয়া সম্পর্কে কথা বলে এবং আজিজ এবং ফিল্ডিং আরও অন্তরঙ্গ বন্ধু হয়। আজিজ ঐ পার্টিতে অ্যাডেলা এবং মিসেস মুরকে প্রফুল্লতার সাথে মারাবার গুহা দেখানোর প্রতিজ্ঞা করে, যেটি হচ্ছে একটি দূরবর্তী একটি জটিল গুহা, যা সম্পর্কে লোকে অনেক কথা বলে কিন্তু মনে হয় প্রকৃতপক্ষে কেউই গুহাটি ভ্রমণ করে নি। আজিজের মারাবারে ভ্রমণের প্রতিজ্ঞা ঐ ধরনের প্রতিজ্ঞা যা মানুষ শুধু বলেই থাকে কিন্তু রক্ষা করার কোন অভিপ্রায় থাকে না। রনি হিসলপ তাদের মাঝে এসে রুক্ষভাবে তাদের পার্টি ভেঙ্গে দেন।

আজিজ ভুলভাবে বিশ্বাস করে যে এই মহিলা দুইজন বাস্তবিকই ক্ষতিকর এবং তার প্রতিজ্ঞা ঠিকভাবে অণুসরণ করা উচিত নয় এবং গুহার মধ্যে ভ্রমণের আয়োজন তার জন্য অনেক ব্যয়ের ব্যাপার। ফিল্ডিং এবং গডবোলও তাদের সাথে একত্রে যাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু তারা সঠিক সময়ে ট্রেন ধরতে পারে না।

আজিজ এবং ইংরেজ দুই মহিলা গুহা ভ্রমণ শুরু করে। প্রথম গুহায় ঢোকার পর মিসেস মুর কোনমতে ক্ল্যাস্ট্রফোবিয়া (claustrophobia- আবদ্ধ স্থান সম্পর্কে অস্বাভাবিক ভীতি) দমন করে কারণ গুহাটি ছিলো অন্ধকার এবং আজিজের অণুচর তাকে অণুসরণ করে ভিতরে যাচ্ছিলো। লোকজনের প্রবল চাপ তার প্রায় শ্বাসরোধ করে ফেলেছিলো। কিন্তু ক্ল্যাস্ট্রফোবিয়ার চেয়ে প্রতিধ্বনি ছিলো বেশি মারাত্মক। প্রতিধ্বনিটি সবসময় “ব্যুম” শব্দের মত শোনাচ্ছিল। মিসেস মুর প্রতিধ্বনি দ্বারা বিরক্ত হয়ে গুহার আরও সামনে আগাতে অস্বীকৃতি জানায়। সুতরাং আজিজ এবং অ্যাডেলা তাদের সাথে একজন স্থানীয় নির্দেশক নিয়ে পরবর্তী গুহা গুলোতে যেতে থাকে।

যেহেতু আজিজ অ্যাডেলাকে পাহাড়ের সামনের দিকে যেতে সাহায্য করছিলো, অ্যাডেলা সরলভাবে আজিজকে জিজ্ঞেস করে যে তার একের অধিক স্ত্রী আছে কি না। অ্যাডেলার অপ্রত্যাশিত মন্তব্যে বিভ্রান্ত হয়ে আজিজ অন্য একটা গুহায় সরে আসে নিজেকে শান্ত করার জন্য। যখন সে বের হয়ে এসে সে গাইডকে একাকী গুহার বাইরে বসে থাকতে দেখে। গাইড আজিজকে বলে যে অ্যাডেলা নিজেই একটা গুহার মধ্যে একা ঢুকেছে। আজিজ তাকে খুজে কিন্তু ব্যর্থ হয়। অ্যাডেলা হারিয়ে গিয়েছে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সে গাইডকে প্রহার করে ফলে গাইড পালিয়ে যায়। আজিজ আবারো তাকে খুজে এবং দেখে যে অ্যাডেলার দূরবীক্ষণ যন্ত্রটি ভেঙ্গে পড়ে আছে। সে সেগুলিকে তার পকেটে তুলে নেয়।

তারপর আজিজ পাহাড়ের নিচের দিকে তাকায় এবং দেখে যে অ্যাডেলা মিসেস ডেরেকের সাথে কথা বলছে। মিসেস ডেরেক একজন ইংরেজ মহিলা যিনি ফিল্ডিং এর সাথে গাড়িতে এসেছেন। আজিজ পাহাড় থেকে দৌড়ে নামে এবং ফিল্ডিংকে আকস্মিকভাবে অভিবাদন জানায়, কিন্তু মিস ডেরেক এবং অ্যাডেলা কোন ব্যাখ্যা না দিয়েই গাড়িতে চলে যান। ফিল্ডিং, মিসেস মুর এবং আজিজ ট্রেনে চন্দ্রপুর আসেন।

তারপরই দুর্দশা পতিত হয়। ডাঃ আজিজকে গ্রেফতার করা হয় এবং অভিযোগ করা হয় যে গুহার মধ্যে সে অ্যাডেলাকে অশালীনভাবে আক্রমণ করেছে। অ্যাডেলা ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের কাছে ঐ ঘটনা সম্পর্কে অভিযোগ করে।

আজিজের বিচারাধীন সময়কালে ব্রিটিশ এবং ইন্ডিয়ানদের মধ্যে জাতিগত উত্তেজনা বাড়তে থাকে। অ্যাডেলা আজিজকে শুধুমাত্র এই বলে অভিযোগ করে যে “আজিজ তাকে স্পর্শ করার চেষ্টা করেছিলো। অ্যাডেলা বলে যে আজিজ তাকে অণুসরণ করেছিলো এবং তাকে আঁকড়িয়ে ধরার চেষ্টা করেছিলো। ফলে সে তার দূরবীক্ষণ যন্ত্র আজিজের দিকে ছুড়ে মেরে তাকে প্রতিহত করে। অ্যাডেলা স্মরণ করে যে আজিজ ভাঙ্গা ফালি কাচ তুলে নেয় এবং এই সময় অ্যাডেলা বের হয়ে আসতে সক্ষম হয়। আজিজের কাছে ঐ দূরবীক্ষণ যন্ত্রের ভাঙ্গা কাঁচগুলোই এখন ব্রিটিশদের একমাত্র প্রমাণ। এছাড়াও ব্রিটিশরা বিশ্বাস করে যে আজিজ প্রকৃতই অপরাধী। সব ব্রিটিশরা মনে করে যে শ্যাম বর্ণের সকল লোকেরই শ্বেত বর্ণের নারীদের প্রতি যৌন লালসা থাকে। তারা স্তব্ধ হয়ে যায় যখন ফিল্ডিং দাবি করে যে আজিজ নির্দোষ। ফিল্ডিংকে ত্যাগ করা হয় এবং নিন্দা করা হয় বিশ্বাসঘাতক হিসেবে। কিন্তু ইন্ডিয়ানরা ফিল্ডিংকে স্বাগত জানায় কারণ তারা মনে করে যে আজিজের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভুয়া এবং এটি করা হয়েছে তাদের সম্প্রদায়ের সুনামকে ধ্বংস করতে।

বিচারের চলাকালীন সপ্তাহে মিসেস মুর অপ্রত্যাশিতভাবে উদাসীন এবং খিটখিটে হয়ে যায়। মনে হয় যেন গুহার ভেতরে তার অভিজ্ঞতা মনুষ্যত্বের উপর তার যে বিশ্বাস ছিলো তা ধ্বংস করে। যদিও ফিল্ডিয়ের মত সেও বিশ্বাস করে যে আজিজ নির্দোষ কিন্তু তার জন্য কিছুই করতে পারে না। রনি যখন বুঝতে পারে যে তার মা আজিজ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা পোষণ করে তখন সে নৌ জাহাজে করে তার মার ইংল্যান্ডে যাবার ব্যবস্থা করেন যাতে সে আজিজের পক্ষে সাক্ষী দিতে না পারে। মিসেস মুর যাত্রা পথেই মারা যান। মিসেস মুরের অণুপস্থিতি আজিজের বিচারের অন্যতম কারণ হয়ে দ্বারায়। আজিজের পক্ষের উকিল বলেন যে যদি মিসেস মুর উপস্থিত থাকতেন তবে শুধুমাত্র তার সাক্ষীই আজিজকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারত।

জ্বর এবং কাঁদার পড়ে অ্যাডেলা আজিজের অপরাধ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব্বে পড়ে যান। বিচারের সময় চূড়ান্তভাবে অ্যাডেলাকে জিজ্ঞেস করা হয় যে আজিজ তাকে যৌন আক্রমণ করেছিলো কিনা। সে প্রতিউত্তর দেবার পূর্বে চিন্তা করার জন্য কিছু সময় চেয়ে নেয়। ঐ সময় অ্যাডেলা গুহার একটি দৃশ্য দেখে এবং বুঝতে পারে যে মিসেস মুরের মত সেও ঐ একই ধরনের মানসিক আঘাত পেয়েছিলো। গুহার ঐ প্রতিধ্বনি তাকে এতই বিভ্রান্ত করেছিলো যে সে সাময়িক সময়ের জন্য মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে গিয়েছিলো। সে তখন গুহা থেকে বের হয়ে পাহাড় দিয়ে নিচে নেমে আসে এবং অবশেষে মিস ডেরেকের সাথে গাড়িতে ফিরে আসেন। ঐ সময় অ্যাডেলা ভুলকরে তার মানসিক আঘাতকে আজিজ দ্বারা আক্রমণ হয়েছে বলে ব্যাখ্যা করে। সে স্বীকার করে যে সে ভুল করেছে। এই কথার পরে মামলা খারিজ করে দেয়া হয় এবং আজিজ নির্দোষ প্রমাণিত হয়।

রনি হিসলপ তাদের বিয়ের বাগদান বিচ্ছিন্ন করে দেন। অ্যাডেলা ফিল্ডিংয়ের বাসায় অবস্থান করে যতক্ষণ না পর্যন্ত নৌ-পথে তার ইংল্যান্ডে ফিরে যাবার ব্যবস্থা না হয়। গুহার ঐ প্রতিধ্বনিই যে এই ঘটনার মূল কারণ এটি ফিল্ডিংয়ের কাছে ব্যাখ্যা করে অ্যাডেলা ইন্ডিয়া ত্যাগ করে এবং কখনো আর ইন্ডিয়া ফিরে আসে নি।

যদিও আজিজ এখন দোষ মুক্ত তবুও সে তার বন্ধু ফিল্ডিংয়ের প্রতি এখনও ক্ষুব্ধ কারণ সে অ্যাডেলার সাথে বন্ধুত্ব করেছিলো। ফিল্ডিং আজিজকে বোঝায় যে অ্যাডেলার কাছ থেকে অর্থ জরিমানা নেয়া ভদ্রোচিত কাজ হবে না। এই দুইজন লোকের বন্ধুত্ব অযৌক্তিকতায় ভুগে, তার পর ফিল্ডিং ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে ইন্ডিয়া ত্যাগ করে। আজিজ মনে করে যে সে ইন্ডিয়া ত্যাগ করেছে অ্যাডেলাকে বিয়ে করার জন্য অ্যাডেলার টাকার কারণে। আজিজ তার বন্ধুর প্রতি ধারণাকৃত বিশ্বাসঘাতকতার জন্য প্রতিজ্ঞা করে যে সে কখনো শ্বেতবর্ণের মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করবে না। আজিজ হিন্দু শাসিত শহর মাউ চলে যান এবং নতুন করে জীবন শুরু করেন।

দুই বছর পরে ফিল্ডিং ইন্ডিয়া ফিরে আসেন এবং আজিজের সাথে দেখা করেন। ফিল্ডিংয়ের স্ত্রী স্টেলা, যিনি মিসেস মুরের মেয়ে। আজিজ, যে এখন রাজার প্রধান চিকিৎসক, এখনও তার পুরাতন বন্ধুর প্রতি জিদ করে আছে। কিন্তু কিছু সময় পরে সে আবার ফিল্ডিংকে আগের মত ভালবাসতে শুরু করে। তথাপি স্বাধীন এবং ঐক্যবদ্ধ ইন্ডিয়ার স্বপ্ন সে এখনও ত্যাগ করেনি। উপন্যাসের শেষ বাক্যগুলোতে আজিজ বলে যে, সে এবং ফিল্ডিং বন্ধু হতে পারে না যতক্ষণ না পর্যন্ত ইন্ডিয়া ব্রিটিশ রাজ থেকে মুক্ত হয়। এমনকি মনে হয় যেন মাটি এবং আকাশও বলছে “এখনও না”।

চরিত্র সমূহ

ডাঃ আজিজ
একজন তরুণ ইন্ডিয়ান চিকিৎসক, যিনি চন্দ্রপুরে ব্রিটিশ হাসপাতালে কাজ করেন।
সিরিল ফিল্ডিং
৪৫ বছর বয়স্ক অবিবাহিত ব্রিটিশ যিনি ইন্ডিয়ানদের জন্য সরকার দ্বারা পরিচালিত একটি কলেজের প্রধান শিক্ষক।
অ্যাডেলা কোয়েস্টেড
একজন তরুণ ব্রিটিশ স্কুল শিক্ষিকা। অ্যাডেলা সিদ্ধান্ত নিতে আসে যে সে মিসেস মুরের ছেলে সিটি ম্যাজিস্ট্রেট রনি হিসলপ কে বিয়ে করবে কি না।
মিসেস মুর
বয়স্কা এবং চিন্তাশীল মহিলা। তিনি রনি হিসলপের মা।
রনি হিসলপ
চন্দ্রপুরে ব্রিটিশ সিটি ম্যাজিস্ট্রেট, এবং মিসেস মুরের ছেলে।
প্রফেসর নারায়ণ গডবোল
একজন বয়স্ক, বিনীত এবং চিন্তাশীল ব্রাহ্মণ যিনি পৃথিবীকে সমতার দৃষ্টিতে দেখেন।
মিঃ টারটন
চন্দ্রপুরের একজন ব্রিটিশ সিটি কালেক্টর।
মিসেস টারটন
মিঃ টারটনের স্ত্রী এবং মুক্তভাবে বর্ণবাদী যিনি ইন্ডিয়ানদের প্রতি রূঢ়।
মেজর ক্যালেন্ডার
ব্রিটিশ প্রধান ডাক্তার এবং আজিজের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
মিঃ ম্যাকব্রাইড
চন্দ্রপুরে ব্রিটিশ পুলিশ সুপারিন্টেনডেন্ট।
মিস ডেরেক
একটি হিন্দু রাজ পরিবার কর্তৃক নিয়োগকৃত ইংরেজ মহিলা।
নওয়াব বাহাদুর
চন্দ্রপুরের একজন সম্ভ্রান্ত মুসলিম ধনাঢ্য ব্যক্তি।
হামিদুল্লাহ
আজিজের চাচা এবং বন্ধু। তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে অধ্যায়ন করেছেন।
অমৃতরাও
কলকাতার একজন প্রসিদ্ধ উকিল যিনি আজিজের পক্ষে লড়েন।
মাহমুদ আলী
একজন মুসলিম ইন্ডিয়ান ব্যারিস্টার যে খোলাখুলিভাবে ব্রিটিশদের ঘৃণা করে।
ডাঃ পান্না লাল
হিন্দু ডাক্তার এবং হাসপাতালে আজিজের প্রতিদ্বন্দ্ব্বী।
রালফ মুর
মিসেস মুরের দ্বিতীয় ছেলে।
স্টেলা মুর
মিসেস মুরের মেয়ে। উপন্যাসের শেষের দিকে তিনি এবং ফিল্ডিং বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।

পুরস্কার

  • ১৯২৪ সালে জেমস টেইট মেমোরিয়াল প্রাইজ জেতেন।
  • মডার্ণ লাইব্রেরি কর্তৃক বিংশ শতাব্দীর ইংরেজি সাহিত্যের ১০০ টি বিখ্যাত কর্মের মধ্যে ২৫তম হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়।

চলচ্চিত্র এবং মিডিয়া

  • শান্তা রমা রাও এই উপন্যাসকে ভিত্তি করে একটি নাটক লেখেন যা ১৯৬০ সালে ওয়েস্ট এন্ড এ এবং ৩১ জানুয়ারি ১৯৬২ সাল থেকে ২৮ এপ্রিল ১৯৬২ সাল পর্যন্ত ব্রডওয়ে- তে চালান হয়।[৩]
  • বিবিসি টিভিতে শান্তা রমা রাও এর ঐ নাটকটি প্লে অফ দ্য মান্থ (Play of the Month) সিরিজে প্রচার করা হয়।[৪]
  • প্রখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় এই উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে চলচ্চিত্র তৈরি করতে চেয়েছিলেন কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয় নি।[৫]
  • ১৯৮৪ সালে ডেভিড লিন এই উপন্যাসের উপর ভিত্তি করে একটি চলচ্চিত্র তৈরি করেন যেটি দুইটি অস্কার এবং অসংখ্য পুরস্কার জেতেন।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী