আন্তর্জাতিক রাসায়নিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ সংস্থা

শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী প্রতিষ্ঠান

রাসায়নিক অস্ত্র নীরস্ত্রীকরণ সংস্থা বা ওপিসিডব্লিউ (ইংরেজি: Organisation for the Prohibition of Chemical Weapons) একটি আন্তঃসরকারী সংস্থা। এটির সদর দফতর নেদারল্যান্ডের হেগ শহরে অবস্থিত। সংস্থার প্রধান হিসেবে রয়েছেন একজন মহা-পরিচালক। স্প্যানিশ কূটনৈতিক ফার্নান্দো আরিয়াস বর্তমান মহা-পরিচালক হিসেবে রয়েছেন।

রাসায়নিক অস্ত্র নীরস্ত্রীকরণ সংস্থা
(ওপিসিডব্লিউ)
ওপিসিডব্লিউ’র লোগো
সদস্যভূক্ত দেশসমূহকে সবুজ রঙে চিহ্নিত করা হয়েছে
গঠিত২৮ এপ্রিল, ১৯৯৭
সদরদপ্তরহেগ, নেদারল্যান্ডস
৫২°০৫′২৮″ উত্তর ৪°১৬′৫৯″ পূর্ব / ৫২.০৯১২৪১° উত্তর ৪.২৮৩১৯৩° পূর্ব / 52.091241; 4.283193
সদস্যপদ
১৯৩ সদস্য রাষ্ট্র
সিডব্লিউসিতে অংশগ্রহণকারী দেশসমূহ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সদস্য।
ইসরাইল, মিশর, উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ সুদান - ৪ দেশ সদস্য নয়।
দাপ্তরিক ভাষা
ইংরেজি, ফরাসি, রুশ, চাইনিজ, স্পেনীয় ও আরবি
মহা-পরিচালক
ফার্নান্দো আরিয়াস[১]
Official organs
রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সম্মেলন
নির্বাহী পরিষদ
কারিগরী দপ্তর
বাজেট
€৭০ মিলিয়ন ইউরো[২]
স্টাফ
প্রায় ৫০০[২]
ওয়েবসাইটopcw.org

অস্ত্র ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র নীরস্ত্রীকরণ করাই এ সংস্থার প্রধান কাজ। এছাড়াও সংস্থাটি রাসায়নিক অস্ত্র সংক্রান্ত সম্মেলনের আয়োজন করে। এটি রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধকরণ ও প্রয়োজনে অস্ত্রগুলো ধ্বংসের ব্যবস্থা করে থাকে। সদস্যভূক্ত রাষ্ট্রসমূহের অস্ত্র ব্যবহার না করার ঘোষণা ও পরিদর্শক দলের প্রতিবেদনের নিশ্চয়তা - উভয়ের মাঝে সমন্বয় সাধন করে।

ইতিহাস

আন্তর্জাতিক আইনের বাস্তবায়নে সাম্প্রতিককালে অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় রাসায়নিক অস্ত্র সম্মেলনের মাধ্যমে। রাসায়নিক অস্ত্রের উন্নয়ন, উৎপাদন, মজুত ও ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা ও রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংসের লক্ষ্যেই এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। হেগভিত্তিক স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে এ সংস্থা কর্তৃক রাসায়নিক অস্ত্র সম্মেলনের আয়োজন করা হয়ে থাকে।[৩]

রাসায়নিক অস্ত্র সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী ও ১৮৮ দেশ কর্তৃক স্বাক্ষরিত এ চুক্তিনামায় বিশ্বের ৯৮% জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। ঘোষিত ৭১,১৯৪ টন অস্ত্রের মধ্যে ৪৪,১৩১ টন অস্ত্র ইতোমধ্যেই ধ্বংস করা হয়েছে। ১৯৫টি অস্ত্র সম্পর্কীয় ও ১,১০৩টি শিল্পাঞ্চলীয় এলাকায় ৪,১৬৭ বার পরিদর্শন করা হয়েছে। এপ্রিল, ১৯৯৭ সাল থেকে ৮১টি দেশের আক্রান্ত রাজ্যগুলোয় পরিদর্শন কার্য সম্পন্ন করেছে আন্তর্জাতিক রাসায়নিক অস্ত্র নীরস্ত্রীকরণ সংস্থা। এছাড়াও, সংস্থার ভবিষ্যৎ কার্য তালিকায় বিশ্বের ৪,৯১৩টি শিল্পাঞ্চলীয় সুবিধাদির বিষয়ে তদারকীরও ব্যবস্থাবলী প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।[৪]

সাংগঠনিক কাঠামো

২০০৭ সালে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সম্মেলন
ফার্নান্দো আরিয়াস, OPCW এর মহাপরিচালক

ওপিসিডব্লিউ’র যাবতীয় কর্মকাণ্ড ও এর অভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক কাঠামো রাসায়নিক অস্ত্র সম্মেলনের মাধ্যমে সীমিত রাখা হয়েছে। প্রধান অংশ হিসেবে রয়েছে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সম্মেলন যা সচরাচর সাংবার্ষিকভিত্তিতে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। সদস্যভূক্ত সকল রাষ্ট্র এতে অংশগ্রহণ করে। প্রত্যেক রাষ্ট্রেরই ভোটের মূল্যমান সমান। সম্মেলনে সংস্থায় স্থায়ী প্রতিনিধিরাই সাধারণতঃ স্ব-স্ব রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করে থাকেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নেদারল্যান্ডে কর্মরত রাষ্ট্রদূতগণই প্রতিনিধি হয়ে থাকেন। সম্মেলনে সংস্থার সাথে জড়িত প্রধান প্রধান আলোচ্যবিষয়ের উপর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রতিরোধ গ্রহণসহ নির্দেশনা, সদস্য দেশের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।[২]

নির্বাহী পরিষদ এ সংগঠনের নির্বাহী কার্যকলাপ পরিচালনা করে। এতে ৪১টি সদস্য রাষ্ট্রের অংশগ্রহণ হয়ে থাকে। দুই বছর মেয়াদী এ পরিষদের সদস্যদেরকে সম্মেলেনের মাধ্যমে মনোনীত করা হয়। বাজেট ও মহাসচিবের সহযোগিতামূলক বিষয়গুলোও সম্মেলনে তুলে ধরা হয়।[২] কারিগরী দপ্তরে পরিষদের কার্যকলাপগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে অধিকাংশ সিদ্ধান্ত পালিত হয়। এখানেই সংগঠনের অধিকাংশ কমর্চারী কাজ করে থাকেন। যাচাই ও পরিদর্শন বিভাগ কর্তৃক এ সংস্থার প্রধান কার্যাবলীসমূহ সম্পন্ন হয়।

সদর দফতর

হেগভিত্তিক আন্তর্জাতিক রাসায়নিক অস্ত্র নীরস্ত্রীকরণ সংস্থার সদর দফতর

সংস্থার সদর দফতরের ভবনের নকশা প্রণয়ন করেছেন কালম্যান ম্যাককিনেল এন্ড উড কোম্পানির মার্কিন স্থাপত্যবিদ গারহার্ড কালম্যান।[৫] ডাচ সরকারের সফলতম প্রচেষ্টার ফসল হিসেবে ভিয়েনা ও জেনেভার বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতায় অবতীর্ণ হয়ে হেগ শহরকে সংস্থার কেন্দ্রস্থল নির্ধারণ করা হয়।[৬] ২০ মে, ১৯৯৮ তারিখে নেদারল্যান্ডের রাণী বিয়েট্রিক্স কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয় সদর দফতরটি।[৭] আট-তলাবিশিষ্ট এ ভবনটি অর্ধ-গোলাকৃতি আকারে নির্মাণ করা হয়েছে।

নোবেল পুরস্কার, ২০১৩

রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারে নিরুৎসাহিতকরণ ও বিস্তার রোধে প্রাণান্তকর চেষ্টায় সম্পৃক্ত থাকায় এ সংস্থাকে ২০১৩ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। পুরস্কার ঘোষণায় বলা হয় যে, আন্তর্জাতিক আইনে রাসায়নিক অস্ত্র ট্যাবু হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। সিরিয়ায় সাম্প্রতিককালের ঘটনায় রাসায়নিক অস্ত্রের আবারো ব্যবহার করা হয়েছে এবং এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহারকে দূরে রাখার স্বার্থেই এ সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।[৮][৯][১০][১১]

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী