অ্যান্টনি গাউদি

কাতালান স্থপতি

আন্তনি গাউদি ই কুর্নেট (Antoni Gaudí i Cornet) (কাতালান উচ্চারণ: [ənˈtɔni ɣəwˈði]; ২৫ জুন ১৮৫২ – ১০ জুন ১৯২৬) রেউস হতে আগত একজন স্প্যানিশ কাতালান স্থপতি ছিলেন। তিনিই কাতালান আধুনিকতার হোতা ছিলেন। গাউদির কাজ তার উচ্চমানের পৃথক ঘরানার ধরন এবং স্বাতন্ত্র্য্যসূচক শৈলী মূলত বার্সেলোনায়ই কেন্দ্রীভূত হয়। বিশেষ করে তার ম্যাগণাপ ওপাস, সাগার্দা ফ্যামিলিয়া স্থাপত্যের এক অণুপম নিদর্শন।

আন্তনি গাউদি
পাউ আউদৌয়ার্ড কর্তৃক ১৮৭৮ সালে গাউদি
জন্ম(১৮৫২-০৬-২৫)২৫ জুন ১৮৫২
মৃত্যু১০ জুন ১৯২৬(1926-06-10) (বয়স ৭৩)
জাতীয়তাস্প্যানিশ
ভবনসমুহসাগার্দা ফ্যামিলিয়া
কাসা মিলা
কাসা বাৎলো
উল্লেখযোগ্য প্রকল্পসমূহপার্ক গুয়েল
কলোনিয়া গুয়েলের গীর্জা

গাউদির কাজকে তার জীবনের এক বড় ভাবাবেগ হিসেবে ধরা হয়েছিলঃ যেমন স্থাপত্যকলা, প্রকৃতি, ধর্ম[৩] গাউদির তার সৃষ্টির প্রতিটি স্তর সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করেছেন, তার স্থাপত্যের সাথে একীভূত হয়ে তিনি বিভিন্ন কারুশিল্পে দক্ষ হয়ে ওঠেন যেমনঃ সিরামিক, স্টেইনড গ্লাস, পেটা লোহার কাজ, তক্ষণ এবং অন্যান্য নির্মাণ শিল্প। তিনি বস্তুনির্মাণে অনেক নতুন পদ্ধতি ব্যবহার এবং শুরু করেন। যেমনঃ ত্রেংকাদিস্ অব্যবহৃত সিরামিকের অংশ দিয়ে তৈরি হয়।

এর কিছু বছর পরে নব্য গোথিক শিল্প ও ওরিয়েন্টাল কৌশল দ্বারা প্রভাবিত হয়ে গাউদি মুদার্নিস্তার অংশ হয়ে পড়েন যে আন্দোলন ঊনবিংশ থেকে বিংশ শতকের দিকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছান। তার কাজ প্রকৃতি দ্বারা অণুপ্রাণিত হয়ে মূলধারাকে অতিক্রম করে একটি জৈব শৈলীদ্বারা চূড়ান্ত পরিণতি পায়। গাউদি খুবকমই নিজের কাজের নিখুঁত পরিকল্পনা করতেন, এরচেয়ে বরং তিনি তাদেরকে ত্রিমাত্রিক স্কেল মডেল হিসেবে নির্মাণ করতেন যেন তার চিন্তাই তাকে প্রভাবিত করে।

গাউদির কাজ আন্তর্জাতিকভাবে বিস্তৃত হয়ে পড়ে এবং তার স্থাপত্য বোঝার জন্য পড়াশোনার নানান ধারা তৈরি হয়। আজও তার কাজ স্থাপত্যবিদ এবং সাধারণ মানুষদের কর্তৃক প্রশংসিত হয়। তার সেরা কাজ, এখনও অসম্পূর্ণ সাগার্দা ফ্যামিলিয়া হল স্পেনের সবচেয়ে বেশি দর্শনীয় ভাস্কর্য।[৪] ১৯৮৪ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে তার সাতটি কাজকে ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান বলে ঘোষণা দেয়। গাউদির রোমান ক্যাথলিক বিশ্বাস তার জীবনের সময় তীব্রতর হয়ে ওঠে ও ধর্মীয় প্রতিচ্ছবি তার কাজে প্রবেশ করে। এই কাজ তাকে "ঈশ্বরের স্থপতি" পদবী এনে দেয়[৫] এবং তার সৌন্দর্যময়তা জন্য তার সুনাম উত্তরোত্তর বাড়িয়ে দেয়।[৬][৭][৮]

বিশ্ব ঐতিহ্য

গাউদির নানা কাজকে ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন; ১৯৮৪ সালে[৯] পার্ক গুয়েল, দ্য পালাউ গুয়েল এবং কাসা মিলা; ২০০৫ সালে[১০] দ্য নটিভিটি ফ্যাসাড, দ্য ক্রিপ্ট এবং দ্য আপসে অফ দ্য সাগ্রাদা ফ্যামিলিয়া, দ্য কাসা ভিসেন্স এবং সান্তা কলোমা দে কর্ভেলোর দ্য ক্রিপ্ট অফ দ্য কলোনিয়া গুয়েল-এর সাথে বার্সেলোনার দ্য কাদা বাৎলো।

গাউদির কাজকে বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান হিসেবে স্বীকৃতি দেবার প্রধান উদ্দেশ্য হল তার অসাধারণ কাজের বিশ্বমূল্য দেয়া।বিভিন্ন উক্তি অনুসারেঃ[১১]

  • ঊনবিংশ শতকের শেষ দিকে এবং বিংশ শতকের গোড়ার দিকে অ্যান্টনি গাউদির কাজ স্থাপত্য এবং ভবননির্মাণ প্রযুক্তির উন্নয়নে একটি ব্যতিক্রমী এবং অসামান্য সৃজনশীল অবদানকেই প্রতিনিধিত্ব করে।
  • কাতালোনিয়ার এল মর্ডানিজম [এসআইসি]র মধ্যে প্রতিনিধিত্বকারী হিসাবে গাউদির কাজ, ঘনিষ্ঠভাবে তাঁর সময়ের সাংস্কৃতিক ও শৈল্পিক স্রোত যুক্ত মূল্যবোধের একটি গুরুত্বপূর্ণ অদলবদল। এটা বিংশ শতাব্দির আধুনিক নির্মাণের সাথে সংযুক্ত অনেক ধারা এবং প্রযুক্তিকে প্রভাবিত এবং প্রত্যাশিত করে তুলেছে।
  • গাউদির কাজ বিংশ শতকের আবাসিক এবং জনসাধারণের জন্য ভবন নির্মাণমূলক স্থাপত্যের ধারার এক অসাধারণ উদাহরণকে প্রতিনিধিত্ব করে যার উন্নয়নে তিই এক উল্লেখযোগ্য এবং সৃজনশীল অবদান রেখেছেন।

জীবনী

জন্ম, শৈশব এবং পড়াশোনা

১৮৫২ সালে অ্যান্টনি গাউদি রিউডোমস বা রেউসে জন্মগ্রহণ করেন।[১২] তার পিতামাতা হল শিল্পপতি বয়লারনির্মাতা ফ্রান্সেস গাউদি ই সিরা (১৮১৩-১৯০৬) এবং অ্যান্টনিয়া কর্নেট ই বার্টরান (১৮১৯-১৮৭৬)। পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনিই ছিলেন কনিষ্ঠতম। এদের মধ্যে তিনজন প্রাপ্তবয়স পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন। তারা হলেনঃ রোসা (১৮৪৪-১৮৭৯), ফ্রান্সেস (১৮৫১-১৮৭৬) এবং অ্যান্টনি। গাউদির পরিবারের উদ্ভব হয় দক্ষিণ ফ্রান্সের আউভার্জেন অঞ্চলে। তার এক পূর্বপুরুষ জোয়ান গাউদি একজন হকার ছিলেন। তিনি সপ্তদশ শতাব্দিতে কাতালোনিয়ায় আসেন এবং সম্ভবত গাউদি বা গাউদিন পারিবারিক নামের উদ্ভব এখান থেকেই হয়।[১৩]

এল মাস দে লাঁ কালডেরেরা, রিউডোমস-এ অবস্থিত গাউদির পারিবারিক বাড়ি।

গাউদির সত্যিকার জন্মস্থান অজানা। এর কারণ কোনপ্রকার বক্তব্যের সমর্থনমূলক কোন নথিপত্র পাওয়া যায়না। তাই তিনি বাইক্স শিবিরের পাশাপাশি দুটি অঞ্চল রেউস না রিউডোমস-এ জন্ম নিয়েছিলেন, সে নিয়ে পরস্পরবিরোধীতা আছে। ছাত্র হিসেবে এবং পেশাজীবিকালের অঞ্চল রেউস হওয়ায় ওখানেই তার জন্মস্থান বলে ধরা হয়। তবে গাউদি অনেক স্থানেই বলেছেন যে তিনি তার পৈতৃক গ্রাম রিউডোমসে জন্মেছিলেন।[১৪] গাউদি রেউসের সান্ট পেরে আপোস্টোল গির্জার ব্যাপ্টিস্ট ছিলেন। এখানেই তার জন্মের পরের দিন তার নাম রাখা হয় "অ্যান্টনি প্লাসিড গিলিয়াম ই কর্নেট"।[১৫]

গাউদির নিজ জন্মভূমির প্রতি অপরিসীম মমতা ছিল এবং সেইসাথে তার মধ্যযুগীয় ঐতিহ্যের প্রতিও ছিল গর্ব। তিনি বিশ্বাস করতেন যে ভূমধ্যের মানুষ সৃজনশীলতা, নতুনত্ব এবং শিল্প ও নকশার এক অন্তর্নিহিত অর্থদ্বারা পরিপূর্ণ ছিল। গাউদির এ পার্থক্য সম্পর্কে বলেন, "আমরা নিজেদেরই এক চিত্রধারণ করি। ভূতদের থেকে ফ্যান্টাসি আসে। ফ্যান্টাসি হল এমন এক জিনিস যা উত্তরের লোকদের থাকে। আমরা হলাম কনক্রিট। ভূমধ্য থেকেই এই ধারাচিত্র চলে আসে। ওরেস্তেস তাঁর পথ চেনে, যেখানে হ্যামলেট তাঁর সন্দেহ দ্বারা বিদীর্ণ হয়।"[১৬] তার বেশিরভাগ সময় বাইরেও খরচ হয়, বিশেষত গ্রীষ্মকালীন সময় তার পরিবার মাস দে লাঁ কালদেরেরা'তে কাটাত। এই ভ্রমণ গাউদিকে প্রকৃতি উপভোগের সুযোগ দিত। প্রাকৃতিক বিশ্বকে উপভোগ করাটাই তাকে ১৮৭৯ সালে ২৭ বছর বয়সে সেন্ট্রা এক্সকার্সিওনিস্তা দে কাতালুনিয়ায় ভর্তি হওয়ায় মূল অবদান রাখেন। উক্ত সংস্থা কাতালোনিয়া ও দক্ষিণ ফ্রান্স আবিষ্কারের অভিযান পরিচালনা করে, এবং এই ভ্রমণকালে প্রায়শই তাদের ঘোড়ার পিঠে চড়ে বা দিনে দশ কিলোমিটার হাঁটতে হয়েছে।[১৭]

১৯০৪ সালে মন্টসেরাট ভ্রমণকালে গাউদি (পিছনে), সাথে তাঁর পিতা (মধ্যে), তাঁর ভাগ্নি রোসা এবং ডক্টর সানতালো।

তরুণ গাউদি নানা রোগে ভুগত। এরমধ্যে বাতরোগ একটি এবং সম্ভবত এই রোগটিই তার স্বল্পভাষী এবং সংরক্ষিত চরিত্রের ক্ষেত্রে প্রভাব রেখেছিল।[১৮] এই স্বাস্থ্য উদ্বেগ এবং ডক্টর নিপের স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের তত্ত্ব[১৯] অল্পবয়সেই গাউদির নিরামিষাশী হবার সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে প্রভাব রেখেছে।.[২০][২১] তার ধর্মীয় বিশ্বাস এবং একনিষ্ঠ নিরামিষাশী হওয়ার প্রবণতা তাকে অনেক দীর্ঘ এবং মারাত্ম উপাসের দিকে ঠেলে দেয়। এগুলো প্রায়শই ছিল অস্বাস্থ্যকর এবং সময়ভিত্তিক। এরূপে চলতে থাকে এবং তা ১৮৯৪ সালে এক জীবনধ্বংসের ন্যায় অসুস্থতা আনয়ন করে।[২২]

গাউদি ফ্রান্সেস বেরেঙ্গুয়ের পরিচালিত এক নার্সারি স্কুলের সাথে যুক্ত ছিলেন। বেরেঙ্গুয়েরে পুত্র, যার নামও ফ্রান্সেস পরবর্তীকালে গাউদির প্রধান সহকারী হন। তিনি রেউসের পিয়ারিস্টস স্কুলে নাম লেখান, যেখানে তিনি এল আরলেকুইন (ভাঁড়) নামের এক সেমিনারের জন্য তার শৈল্পিক প্রতিভা প্রদর্শন করেন।[২৩] এসময়টাতে তিনি রেউসের "ভ্যাপর নউ" বস্ত্র কারখানায় শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করতেন। ১৮৬৮ সালে তিনি কনভেন্ট দেল কার্মে-তে শিক্ষকতা শেখার জন্য বার্সেলোনাতে চলে আসেন। কিশোর বয়সের এই দিনগুলোতে গাউদি উটোপিয়ান সামাজিকতায় আকর্ষিত হন এবং এডুয়ার্ড টোডা ই গুয়েল ও জোসেপ রিবেরা ই স্যান্স নামের দুই ছাত্রের সাথে পোবলেট আশ্রমস্থল, যা পরে উটোপিয়ান ফ্যালানস্টেরেতে পরিণত হবে, তা পুনঃনির্মাণের পরিকল্পনা করেন।[২৪]

১৮৭৫ থেকে ১৮৭৮ সালের মধ্যে গাউদি সামরিক প্রশাসক হিসেবে বার্সেলোনার বাধ্যতামূলক সামরিক চাকরির পদাতিক রেজিমেন্ট শেষ করেন। তার বেশিরভাগ সেবাই অসুস্থতাজনিত ছুটিতে খরচ হয়ে যেত এবং তিনি তার পড়াশোনা চালিয়ে যান। তার অসুস্থ দেহই তাকে তৃতীয় কার্লিস্ট যুদ্ধে যোগদান থেকে রক্ষা করেন। এই যুদ্ধ ১৮৭২ থেকে ১৮৭৬ সাল পর্যন্ত চলে।[২৫] ১৮৭৬ সালে গাউদির মাত ৫৭ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন এবং ঐ বছরই ২৫ বছর বয়সে তার বড় ভাই ফ্রান্সেস মারা যান। ফ্রান্সেস তখন চিকিৎসক হিসেবে মাত্র বেরিয়েছেন। এই সময়ই গাউদি লোৎজা স্কুল এবং বার্সেলোনা স্থাপত্য উচ্চ বিদ্যালয় থেকে স্থাপত্যকলায় পড়াশোনা শুরু করেন এবং ১৮৭৮ সালে গ্র্যাজুয়েট হন। তার পড়ালেখার খরচ যোগানোর জন্য তিনি লিয়ানড্রে সিরালাখ, জোয়ান মার্টোরেল, এমিলি সালা কর্তেস, ফ্রান্সিসকো দে পলা দেল ভিলা ইয়ে লোজানো এবং জোসেপ ফন্টসেরে সহ আরো নানান স্থপতিবিদ এবং নির্মাতার জন্য নকশাকার হিসেবে কাজ করেন।[২৬] তার স্থাপত্যের ক্লাসছাড়াও তিনি ফরাসি, ইতিহাস, অর্থনীতি, দর্শন এবং নন্দনতত্ত্বের ওপরও পড়াশোনা করেন। তার গ্রেড ছিল মধ্যম গোছের এবং তিনি প্রায়শই বিভিন্ন কোর্সে অকৃতকার্য হতেন।[২৭] তাকে তার গ্রেড হস্তান্তরের সময় বার্সেলোনা স্থাপত্য বিদ্যালয়ের পরিচালক এলিস রোজেন্ট বলেছিলেন, "আমরা এই একাডেমিক ডিগ্রী দিচ্ছি হয় এক নির্বোধকে নতুবা এক প্রতিভাবানকে। সময়ই সব দেখাবে।"[২৮] গাউদির বন্ধু ভাস্কর্যশিল্পী লোরেঙ্ক মাতামালা তার রসবোধসুলভ শ্লেষাত্মক সুরে বলেন, গাউদি তার ডিগ্রী নেবার সময় বলেছিলেন, "লোরেঙ্ক, ওরা বলছে এখন আমি একজন স্থপতি।"[২৯]

প্রাপ্তবয়স এবং পেশাদার কাজ

গাউসি ও ইউসেবি গিল কলোনিয়া গুয়েল যাবার পথে (১৯১০)

গাউদির প্রথম কাজগুলো ছিল বার্সেলোনার জন্য ডিজাইনকৃত প্লাসা রিয়েল, অসমাপ্ত জিরোসি নতুন স্ট্যান্ড এবং কো-অপারাটিভা ওব্রেরা মাতারোনেন্সে (মাতারো বিল্ডিংয়ের শ্রমজীবী সহকারী) ভবন। তিনি তার প্রথম গুরুত্বপূর্ণ কাজ কাসা ভিসেন্সের জন্য অনেক প্রশংসা পান এবং ক্রমশ আরো তাৎপর্যবাহী প্রস্তাব পেতে শুরু করেন। ১৮৭৮ সালের প্যারিস বিশ্বমেলায় গাউদি গ্লোভ ম্যানুফ্যাকচারার কোমেলা'র জন্য নির্মিত শোকেস প্রদর্শন করেন। এর কার্যকরী এবং নান্দনিক মর্ডার্নিস্তা ডিজাইন কাতালান শিল্পপতি ইউসেবি গুয়েলকে আকর্ষণ করে। তিনি তখন গাউদির সবচেয়ে অসাধারণ কাজঃ দ্য গুয়েল ওয়াইন সেলার, দ্য গ্যতেল প্যাভিলিয়নস, দ্য পালাউ গুয়েল (গুয়েল প্রাসাদ), দ্য পার্ক গুয়েল (গুয়েল পার্ক) এবং কলনিয়া গুয়েল গির্জার সমাধিগৃহ নির্মাণের পৃষ্ঠপোষকতা করেন। গাউদি কোমিলাসের মার্কুইস, কাউন্ট গুয়েলের শ্বশুরের বন্ধু হয়ে ওঠেন এবং তার জন্য কোমিলাসে "এল ক্যাপরিচো" নির্মাণ করেন।

১৮৮৩ সালে গাউদি বার্সেলোনার ক্যাথেড্রাল ব্যাসিলিকা ই টেম্পল এক্সপিয়াটরি দে লাঁ সাগার্ডা ফ্যামিলিয়া (রাজপ্রাসাদ এবং লা সাগার্ডা ফ্যামিলিয়া-এর প্রায়শ্চিত্তক্ষম গির্জা) এর একটি সম্প্রতি প্রবর্তিত প্রকল্পের দায়িত্ব পান। গাউদি এর প্রাথমিক নকশা সম্পূর্ণ পালটে দেন এবং তার নিজস্ব বৈচিত্রমূলক স্টাইলকে অণুপ্রাণিত করে তোলেন। ১৯১৫ সাল থেকে শুরু করে তার মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এই কাজে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে নিয়োজিত করেন। উক্ত কমিশনের মাধ্যমে একাধিক কাজের সাথে যুক্ত হবার ফলে তাকে দলগত কাজের ওপর নির্ভর করতে হয়। তার দল গঠিত হয় বিভিন্ন রকম নির্মাণমূলক কর্মসূচীর সাথে সম্পৃক্ত পেশাজীবীদের নিয়ে। তার অধীনে কাজ করা বিভিন স্থপতি পরবর্তীতে অনেক বিখ্যাত হয়ে ওঠে। যেমনঃ জোসেপ মারিয়া জুজল, জোয়ান রুবিও, সিজার মার্টিনেল, ফ্রান্সেস ফোলগুয়েরা এবং জোসেপ ফ্রান্সেস র‍্যাফোলস উল্লেখযোগ্য। ১৮৮৫ সালে গাউদি গ্রামীণ অঞ্চল সান্ত ফেলিউ দে কোডিনস-এ চলে আসেন কলেরার মহামারী এড়াতে। তখন বার্সেলোনায় ভয়াবহ কলেরার প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। তিনি ফ্রান্সেস উল্লারের বাড়িতে থাকতেন, যার জন্য তিনি কৃতজ্ঞতাস্বরূপ একটি খাবার টেবিল নির্মাণ করে উৎসর্গ করেছিলেন।[৩০]

১৮৮৮ সালে এক্সপোসিশন ইউনিভার্সাল দে বার্সেলোনায় গাউদির ব্যাখ্যান

১৮৮৮ সালের বিশ্বমেলা ছিলে বার্সেলোনায় অনুষ্ঠিত যুগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবং মডার্নিজম তথা আধুনিকতা আন্দোলনে প্রধান ভূমিকা পালন করে। গাউদিসহ শ্রেষ্ঠ স্থপতিরা তাদের শ্রেষ্ঠ কাজগুলো প্রদর্শন করেন। গাউদি কোম্পানিয়া ট্রান্সালান্তিকা (ট্রান্সলেন্টিক কোম্পানি) এর জন্য নির্মাণকৃত ভবনটি প্রদর্শন করেন। এর পরেই তিনি বার্সেলোনা সিটি কাউন্সিলের সালো দে সেন্ট পুননির্মাণের আদেশ পান কিন্তু এই প্রকল্পটি শেষে ভেস্তে যায়। ১৮৯০ সালের গোড়ার দিকে গাউদি কাতালোনিয়ার বাইরে দুটো প্রকল্পের কাজ পান। এগুলো ছিল এপিস্কোপাল প্রাসাদ, অ্যাসটোরগা এবং লিওনের কাসা বোটিনেস। এই কাজগুলো স্পেনে গাউদির বর্ধিষ্ণু জনপ্রিয়তাকে আরো গতিময় করে তোলে। ১৮৯১ সালে তিনি মালাগা এবং টাঙ্গিয়েরস যান ফ্রান্সিসকান ক্যাথলিক মিশোনের একটি প্রকল্পের স্থানদর্শনের জন্য। কোমিলাসের দ্বিতীয় মার্কুইস তাকে এই প্রকল্পের ডিজাইন করতে অণুরোধ করেছিলেন।[৩১]

কাসা বাৎলোর ছাদের স্থাপত্য

১৮৯৯ সালে গাউদি সিরকল আর্টিস্টিক দে সান্ত লুক (সেইন্ট লুক আর্টিস্টিক সার্কেল) নামের একটি ক্যাথলিক আর্টিস্টিক সোসাইটিতে যোগদান করেন। বিশপ জোসেপ তোরাস ই বাগেস এবং জোসেপ ও জোয়ান লিমনা ভাইদ্বয় উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠা করেন, তিনি লিগা এসপিরিচুয়াল দে লাঁ মারে দে দেউ দে মন্টসেরাট (আমাদের মন্টসেরাট লেডির আধ্যাত্মিক লীগ) নামক অপর একটি কাতালান প্রতিষ্ঠানেও যুক্ত হন।[৩২] তার রাজনৈতিক চিন্তার রক্ষণশীল ও ধর্মীয় চরিত্র ঘনিষ্ঠভাবে কাতালান মানুষের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতিরক্ষার সাথে যুক্ত ছিল।[৩৩]

শতাব্দির শুরুর দিকে গাউদি একের পর এক নানা প্রকল্পে কাজ করছিলেন। এগুলো তার কাজকে প্রকৃতি কর্তৃক অণুপ্রাণিত আরো অধিক ব্যক্তিগত ধরাণায় নিয়ে যায়। ১৯০০ সালে তিনি কাসা কালভেট-এর জন্য বার্সেলোনা সিটী কাউন্সিল থেকে বর্ষসেরা বিল্ডিং পুরস্কার লাভ করেন, এই শতাব্দির প্রথম যুগে গাউদি নিজেকে কাসা ফিগুয়েরাস (ফিগুয়েরাস বাড়ি, বেল্লেসগার্ড নামে সমধিক পরিচিত); দ্য পার্ক গুয়েল, একটি অসফল নগরায়নের প্রকল্প এবং পালমা দে ম্যাজোর্কার ক্যাথোড্রালের পুনঃসংস্কারের মত কাজে নিয়োজিত করেন এবং একাধিকবার ম্যাজোর্কায় গমন করেন। ১৯০৪ থেকে ১৯১০ সালের মধ্যে তিনি কাসা বাৎলো (বাৎলো বাড়ি) এবং কাসা মিলা (মিলা বাড়ি) নামের দুটো প্রতীকস্বরূপ কাজ করেন।

জোয়ান লিমনার সেইন্ট ফিলিপ নেরি সেলিব্রেটিং দ্য হলি মাস (সেন্ট ফেলিপ নেরির গীর্জা, বার্সেলোনা)। গাউদিই ছিলেন সেইন্ট ফিলিপ নেরির মুখের আদল।

গাউদির ক্রমবর্ধমান খ্যাতির ফলে ১৯০২ সালে অঙ্কনশিল্পী জোয়ান লিমনা বার্সেলোনার সেন্ট ফেলিপ নেরি গির্জার করিডরের অঙ্কনের জন্য সেইন্ট ফিলিপ নেরিকে প্রতিনিধিত্ব করবার জন্য গাউদির কাজকে বেছে নেন।[৩৪] ঐ একই বছরে তার বন্ধু চিকিৎসক পিরে সান্তালোর পুত্র জোয়ান সান্তালোর সাথে তিনি অসফলভাবে একটি পেটা লোহা উৎপাদন কোম্পানী তৈরি করেন।[৩৫]

বার্সেলোনায় যাবার পর গাউদি তার ঠিকানা প্রায়শই বদলে ফেলতেনঃ ছাত্র হিসেবে সাধারণত তিনি বাস করতেন গোথিক কোয়ার্টারের দিকে; যখন তিনি তার কর্মজীবন শুরু করলেন তিনি এইক্সাম্পল চত্বরে বিভিন্ন ফ্ল্যাটবাড়িতে ভাড়া হিসেবে বাস করতেন। এবং শেষে ১৯০৬ সালে তিনি গুয়েল পার্কে তার নিজের জায়গায় নিজের বাড়িতে বসবাস করতেন এবং উক্ত বাড়িটি এস্টেটের জন্য শোকেস সম্পত্তিতেই তার সহকারী ফ্রান্সেস বেরেঙ্গুয়ের নির্মাণ করেছিলেন। এরপর জায়গাটি গাউদি জাদুঘরে পরিণত হয়। সেখানে তার পিতা ( যিনি ৯৩ বছর বয়সে ১৯১২ সালে মারা যান) বসবাস করতেন। তিনি ১৯২৫ সাল পর্যন্ত ঐ বাড়িতে বাস করেন। তার মৃত্যুর কয়েক বছর আগে তিনি সাগার্ডা ফ্যামিলিয়ার ওয়র্কশপের ভেতরে বাস করা শুরু করেন।

গাউদির ব্যক্তিত্বের প্রবল প্রভাবশালী ঘটনা ছিল ১৯০৯ সালের দুঃখময় সপ্তাহ। গাউদি এই বিক্ষোভপূর্ণ সপ্তাহে গুয়েল পার্কের বাড়িতে বসবাস করেন। এক বদ্ধ অবস্থা এবং গীর্জা ও সন্ন্যাসীদের বিহারের ওপর আক্রমণ গাউদিকে সাগার্ডা ফ্যামিলিয়ার নিরাপত্তা নিয়ে ভাবিয়ে তোলে। কিন্তু ভবনটি নিরাপদ এবং অক্ষতই থাকে।[৩৬]

১৯১০ সালে ফ্রান্সের সোসাএতে দেস বিয়াউক্স-আর্টস (ফাইন আর্টস সোসাইটি)র বার্ষিক বৈঠক চলাকালীন প্যারিসের গ্রান্ড পালাইস-এর এক প্রদর্শনী তার কাজের প্রতি উৎসর্গ করা হয়। গাউদি কাউন্ট গুয়েলের আমন্ত্রণে উক্ত স্থানে যান। সেখানে তার কাজের ধারাবাহিক ছবি, প্রকল্প এবং প্লাস্টার স্কেল মডেল প্রদর্শন করা হয়। যদিও তিনি হরস কনকাওয়ারস-এ অংশগ্রহণ করেন, তিনি ফরাসি প্রেসের কাছ থেকে ভাল পর্যালোচনাই পেয়েছিলেন। এই উদ্ভাসের এক বিপুল অংশকে এর পরের বছর মাদ্রিদের এল বুয়েন রিটিরোর মিউনিসিপ্যাল প্রদর্শনী হলে অনুষ্ঠিত ই স্যালন ন্যাশনাল দে আর্গুইটেকচারা-তে দেখা যায়।[৩৭]

১৯১০ সালের মে মাসে অনুষ্ঠিত প্যারিস প্রদর্শনীতে গাউদি ভিকে তার বন্ধ কাটান। এখানে তিনি জ্যাউম বামস এর শতবার্ষিকীতে প্লাসা মেজর অফ ভিক-এর জন্য দুইটি ব্যাসাল্ট ল্যাম্পপোস্ট এবং পেটা লোহার ডিজাইন করেন। এর পরের বছর তিনি যক্ষ্মায় অসুস্থ হওয়ার ফলে পুইফসিরদার একটি স্বাস্থ্যপুনরুদ্ধারকারী স্থানে বাস করেন। এই সময়ে তিনি সাগার্ডা ফ্যামিলিয়ার প্যাশন এর ছদ্মরূপের প্রকল্পে উৎসাহিত হন।[৩৮] অসুস্থতার কারণে তিনি ৯ই জুন তার নোটারি র‍্যামন কান্তো ই ফিগুয়েরেস-এর অফিসে উইল তৈরি করেন, কিন্তু পরবর্তীতে সম্পূর্ণরুপে সুস্থ হন।[৩৯]

১৯১০ সালের পরের যুগ গাউদির জন্য কঠিন ছিল। এই যুগে স্থপতি তার ভগিনী রোসার মৃত্যু (১৯১২) এবং তার প্রধান সহকর্মী ফ্রান্সেস বেরেঙ্গুয়েরের মৃত্যু (১৯১৪) সহ্য করেন; এক ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয় যা ১৯১৫ সালে সাগার্ডা ফ্যামিলিয়ার কাজ বন্ধ করে দেয়; ১৯১৬ সালে তার বন্ধুবর ও ভিকের বিশপ জোসেপ তোরাস ই বাগেসের মৃত্যু ঘটে; ১৯১৭ সালে কলোনিয়া গুয়েলে কাজের ভাঙ্গণ ঘটে; এবং ১৯১৮ সালে তার বন্ধু ও উৎসাহদাতা ইউসেবি গুয়েলের মৃত্যু ঘটে।[৪০] সম্ভবত এই সকল দুঃখজনক ঘটনার পরে তিনি নিজেকে ১৯১৫ সালে সাগার্ডা ফ্যামিলিয়ার কাজে নিজেকে সম্পূর্নরুপে নিয়োজিত করেন, নিজেকে তার কাজের কাছেই আশ্রয় নেন। গাউদি তার সহকর্মীদের কাছে এভাবেই সমর্পণ করেন:

আমার ভাল বন্ধুরা মারা গেছে; আমার কোন পরিবার বা কোন মক্কেল নেই, নেই কোন ভাগ্য বা অন্য কিছু। এখন আমি আমাকে গির্জার প্রতি সম্পূর্ণরূপে নিয়োজিত করতে পারব।[৪১]

গাউদি তার জীবনের শেষের বছরগুলো সম্পূর্ণভাবে "দরিদ্রর ক্যাথেড্রাল"-এ উৎসর্গ করেন। এটা সাধারণভাবে জানা যে এটা চালিয়া যাবার জন্য তিনি ভিক্ষাও গ্রহণ করেন। এই কারণের প্রতি উৎসর্গ করা ছাড়াও তিনি আরো বেশকিছু কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন, যা বেশিরভাগই তার ক্যাথলিক বিশ্বাসের সাথে সম্পর্কযুক্তঃ ১৯১৬ সালে তিনি পালাউ দে লাঁ মিউজিকা কাতালানায় গ্রেগরিয়ান ভজনের ওপর এক কোর্স করেন। কোর্সে শিক্ষাদান করেন বেনেডিক্টাইন সন্ন্যাসি এম. সুনিয়ল।[৪২]

ব্যক্তিজীবন

গাউদি তার জীবন পুরোপুরিভাবেই তার পেশাকে উৎসর্গ করেছিলেন। আর তাই তিনি ছিলেন অকৃতদার। জানা যায় তিনি একমাত্র জোসেফা মরেউ নামের এক নারীর প্রতিই আকর্ষিত হয়েছিলেন। তিনি ১৮৮৪ সালের দিকে মাতারো কো-অপারেটিভ এর শিক্ষক ছিলেন কিন্তু এই সম্পর্ক একতরফা ছিল।[৪৩] অতঃপর গাউদি তার ক্যাথলিক বিশ্বাসের সাথে তাকে দেওয়া গভীর আধ্যাত্মিক শান্তির কাছে আশ্রয় নেন। গাউদি প্রায়ই বিষাদময় প্রতিক্রিয়াশীল ও অহংকারী এবং সেইসাথে অসামাজিক ও অপ্রীতিকর একজন মানুষ হিসেবে দেখানো হয়। তবে তার কাছের মানুষেরা তাকে বন্ধুত্বপূর্ণ ও নম্র, আলাপি এবং বন্ধুদের প্রতি বিশ্বাসী বলেই চিহ্নিত করেছেন। এরমধ্যে তার পৃষ্ঠপোষক ইউসেবি গুয়েল এবং ভিকের বিশপ জোসেপ তোরেস ই বাগেস এবং লেখক জোয়ান মারাগাল ও জ্যাসিন্ট ভার্ডাগুয়ের, চিকিৎসক পিরে সান্তালো এবং তার আরো কয়েকজন বিশ্বাসী সহকর্মী যেমন ফ্রান্সেস বেরেঙ্গুয়ের ও লোরেঙ্ক মাতামালা অন্যতম।[৪৪]

গাউসি পোপসংক্রান্ত পোপের দূত, কার্ডিয়াল ফ্রান্সিসকো রাগোনেসিকে সাগার্ডা ফ্যামিলিয়া দেখাচ্ছেন (১৯১৫)। ঐ উৎসবে মোসেগণোর রাগোনেসি গাউসিকে "স্থাপত্যের দান্তে" বলেন।[৪৫][৪৬]

গাউদির ব্যক্তিগত আবির্ভাব-নর্ডিক বৈশিষ্ট্য, স্বর্ণকেশী চুল এবং নীল সময় অবশ্যই উপর আমূল চোখ সময়ের স্রোতে পরিবর্তিত হয়। তরুণাবস্থায় তিনি সপ্রতিভ দামি স্যুট পড়তেন, সযত্নে লালিত চুল এবং দাড়িকেলি চরিতার্থমূলক পানভোজনবিলাসী স্বাদান্বেষী ছিলেন। তিনি প্রায়শই থিয়েটার এবং অপেরায় ও ঘোড়ার গাড়িতে করে প্রকল্পের স্থানে যেতেন। বয়স্ক গাউদি মিতব্যয়ী খেতেন, পুরানো-ছেঁড়া পোশাক পরিহিত থাকতেন এবং ভিক্ষুকের মতন উপেক্ষিত পোশাক পরতেন এবং আমৃত্যু এমনই ছিলেন।[৪৭]

গাউদি ভুলক্রমে হয়ত কোন লেখা লিখতেন। অফিশিয়াল কর্তৃপক্ষ তার কাজের প্রযুক্তিগত রিপোর্ট চাওয়ার ফলে তার জন্য তিনি রিপোর্ট লিখতেন, বন্ধুদের কাছে (বিশেষ করে জোয়ান মারাগাল) কিছু চিঠি এবং কিছু জার্নালের লেখা নিবন্ধ। তার সহকারী এবং শিষ্যদের সংগ্রহকরা কিছু উক্তি, বিশেষত জোসেপ ফ্রান্সেস র‍্যাফোলস, জোয়ান বার্গোস, সিজার মার্টিনেল এবং ইসিড্রে পুইগ ই বোয়াডা-ই এসব সংগ্রহ করেছিলেন। গাউদির রেখে যাওয়া একমাত্র লিখিত নথি হল ম্যানুস্ক্রিটো দে রেউস (রেউস ম্যানুসক্রিপ্ট) (১৮৭৩-১৮৭৮)। এটি হল এক ধরনের ছাত্র-দিনপঞ্জী। এখানে তিনি স্থাপত্য এবং সজ্জিত বিভিন্ন ইমপ্রেশন সংগ্রহ করতেন এবং বিষয় অনুসারে তিনি ধারণা নির্মাণ করে সেখানে তুলে রাখতেন। তন্মধ্যে খ্রিস্টীয় গীর্জা এবং তার পূর্বপুরুষের বাড়ি, সেই সাথে একটি ডেস্ক নকশা নেভিগেশন অলঙ্করণ এবং মন্তব্য সম্পর্কে একটি লেখা উল্লেখযোগ্য।[৪৮]

গাউদি সর্বদাই কাতালোনিয় সংস্কৃতির পক্ষে ছিলেন কিন্তু রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় হয়ে এর স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা করতে অনাগ্রহী ছিলেন।[৪৯] ফ্রান্সেস কামবো এবং এনরিক প্রাঁত দে লাঁ রিবার মত রাজনীতিবিদেরা তাকে ডেপুটির পক্ষ নিয়ে রাজনীতির ময়দানে নামার পরামর্শ দিয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সে প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।[৫০] ১১ই সেপ্টেম্বর, ১৯২৪ সালে কাতালোনিয়ার জাতীয় দিবসে একনায়ক প্রিমো দ্য রিভেরার কাতালান ভাষার সংস্কৃতি নিষিদ্ধর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ায় তাকে মারা হয়। সিভিল গার্ড গাউদিকে গ্রেপ্তার করে এবং তাকে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য কারাবাস করতে হয়। এরপর তিনি ৫০ পেঁসো দিয়ে ছাড়া পান।[৫১]

মৃত্যু

গাউদির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া (১২ জুন, ১৯২৬)

৭ই জুন, ১৯২৬ সালে গাউদি অভ্যাসের বশবর্তী হয়ে রোজকার মত সেন্ট ফেলিপ নেরি গির্জার দিকে প্রার্থনা ও স্বীকারোক্তির জন্য হাঁটছিলেন। জিরোনা ও বেইলিন স্ট্রিটের মাঝে গ্রান বিয়া দে লেস কোর্তেস কাতালানিস-এর মধ্য দিয়ে হাঁটার সময় তিনি একটি ধাবমান ট্রামের সাথে ধাক্কা লাগার ফলে আহত হন এবং চেতনা হারিয়ে ফেলেন।[৫২] তার জীর্ণ পোশাক এবং পরিচয়সূচক দস্তাবেজের অভাব থাকায় তিনি তাৎক্ষণিক চিকিৎসা পানও না। এরপর একজন পুলিশ অফিসার ট্যাক্সিতে করে তাকে সান্তা ক্রিউ হাসপাতালে নিয়ে যান, সেখানে তিনি অপূর্ণাঙ্গ যত্ন পান।[৫৩] এতক্ষণে সাগার্ডা ফ্যামিলিয়ার যাজক, মোঁসে গিল পারেস দুর্ঘটনার পরের দিন তাঁএ চিনতে পারেন। কিন্তু গাউদির অবস্থার অবনতি ঘটে এবং উচ্চতর চিকিৎসা নেবার অবস্থায় আর তিনি ছিলেন না। ১০ই জুন, ১৯২৬ সালে ৭৩ বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এর দুইদিন পর তাকে দাফন করা হয়। আমাদের মাউন্ট কার্মেলের লেডির চ্যাপেলের সমাধিস্থলে তাকে শেষবিদায় জানানোর জন্য বিশাল ভিড় হয়। তার কবরের ফলকে নিম্নোক্ত পঙ্‌ক্তি লেখা রয়েছেঃ

Antonius Gaudí Cornet. Reusensis. Annos natus LXXIV, vitae exemplaris vir, eximiusque artifex, mirabilis operis hujus, templi auctor, pie obiit Barcinone die X Junii MCMXXVI, hinc cineres tanti hominis, resurrectionem mortuorum expectant. R.I.P.[৫৪]

বাংলা ভাষায় অনুবাদঃ

(অ্যান্টনিয়াস গাউদি কর্নেট। রেউস থেকে আগত। ৭৪ বছর বয়সে আদর্শ জীবনযাপিত এক মানুষ, একজন অসাধারণ কারিগর, গীর্জা, এই অবিশ্বাস্য কাজের হোতা, জুন ১৯২৬ এর দশম জুন ধার্মিকভাবে বার্সেলোনায় মৃত্যুবরণ করেন; অতঃপর এমন মহান এক মানুষের ছাই মৃতদের পুনরুত্থান প্রতীক্ষা করে। তিনি চিরশান্তি লাভ করুক।)

সহকর্মী

গাউদি যে বিপুল পরিমাণ কাজের সম্মুখীন হয়েছিলেন, তা শুধুমাত্র কাজের পরিমাণের দিক থেকেই নয়, তাদের জটিলতার দিক থেকেও কাজগুলো বিপুল পরিমাণ সাহায্যকারী, অঙ্কনশিল্পী, স্থাপত্যবিদ এবং নকশাকারের প্রয়োজন হয়। গাউদি সর্বদাই নেতৃত্ব দিতেন, কিন্তু তার সহকর্মীদের নিজ নিজ ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ ঘটানোর সুযোগও করে দিতেন। তার অভিজ্ঞতার স্বাদ তার ক্ষেত্রে ও সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রেও প্রদর্শিত হয়েছে যেন বিপুল পরিমাণ পেশাদারের সমন্বয়ে একটি সমন্বিত দল তৈরি করা যায়।[৫৫]তার সহকর্মীরা ছিলেন:

  • স্থাপত্যবিদ: ফ্রান্সেস বেরেঙ্গুয়ের, জোসেপ মারিয়া জুজল, ক্রিস্টোফার কাসকান্তে ই কলম, জোসেপ ফ্রান্সেস র‍্যাফলস, সিজার মার্টিনেল, জোয়ান বার্গোস, ফ্রাসেস ফোলগুয়েরা, জোসেপ কানালেতা, জোয়ান রুবিও, ডোমেনেক সাগ্রেনেস, ফ্রান্সেস কুইন্টানা, ইসিড্রে পুইগ ই বোয়াডা, লুইস বোনেট ই গ্যারি।
  • ভাস্কর্যশিল্পী: কার্লেস মনি, জোয়ান ফ্লোটাতস, লোরেঙ্ক মাতামাআ, জোয়ান মাতামালা, জোসেপ লিমোনা।
  • অঙ্কনশিল্পী: রিকার্ড ওপিসো, অ্যালেক্স ক্লাপেস, ইউ পাসকুয়েল, জেভিয়ার নোগুয়েস, জ্যাউম লোঙ্গুয়েরাস, জোয়াকুইন তোরেস গ্যার্সিয়া।
  • নির্মাতা এবং ফোরম্যান: আগুস্তি ম্যাসিপ, জোসেপ বায়ো ই ফন্ট, ক্লাউডি আলসিনা ই বোনাফন্ট, জোসেপ পার্ডো ই কাসানোভা এবং তার ভগিনী জুলিয়া বার্ডিয়ের ই পার্ডো।
  • নকশাকারী:ইউডাল্ড পান্টি (ছুতার ও কামার), জোয়ান ওনোস (কামার), লুইস ইয়ে জোসেপ বাদিয়া ই মিয়ারনাউ (কামার), জোয়ান বার্টরান (প্লাস্টারকারী), জোয়ান মুন্নি (ক্যাবিনেট নির্মাতা), ফ্রেডেরিক ল্যাবোরিয়া (ক্যাবিনেট নির্মাতা), অ্যান্টনি রিগাল্ট ই ব্লাঞন (পরকলানির্মাতা), জোসেপ পেলেগ্রি (পরকলানির্মাতা), মারিও মারাগলিয়ানো (মোজাইক শিল্পী), জ্যাউম পুজল ই বাউসিস এবং তার ছেলে পাউ পুজল ই ভিলা (সিরামিসিস্ট)।

সম্মান

তার মৃত্যুর পর গাউদির কাজ উপেক্ষার সময় অতীবাহিত করে এবং আন্তর্জাতিক সমালোচনার কবলে পড়ে। এগুলোকে বলা হয় বারোক এবং অতিরিক্ত কল্পনাপ্রসূত। তার নিজের জন্মভূমি নউসেন্টিজম-এর মাধ্যমে তাকে অবজ্ঞা করা হয়, যে আন্দোলন আধুনিকতা হিসেবে পরিচিত। ১৯৩৬ সালে স্প্যানিশ গৃহযুদ্ধকালীন সাগার্ডা ফ্যামিলিয়ায় গাউদির ওয়র্কশপ নিয়ে তোলপাড় হয় এবং বিশাল সংখ্যক নথি, প্ল্যান এবং স্কেল মডেলকে ধ্বংস করা হয়।

গাউদির খ্যাতি ১৯৫০ সালের দিকে আবারও পুনরুদ্ধার করা হয়, যখন তার কাজ সালভাদর দালিসহ স্থপতি জোসেপ লুইস সের্ট এর কর্তৃকও বিজিত হয়। ১৯৫২ সালে এই স্থপতর জন্মের শতবার্ষিকী উপলক্ষে দ্য এসোসিয়েশন দে এমিগোস দে গাউদি (গাউদির বন্ধুসংস্থা) প্রতিষ্ঠিত হয় তার সম্মান বজায় রাখার জন্য এবং প্রচার করার উদ্দেশ্যে। চার বছর পর বার্সেলোনার সালো দেল টিনেলে একটি অতীত-সম্পর্কিত অণুষ্ঠান আয়োজিত হয়। এছাড়াও কাতালোনিয়ার পলিটেকনিক বিশ্ববিদ্যালয়-এ গাউদির চেয়ারের ব্যবস্থা করা হয়। এর উদ্দেশ্য ছিল গাউদির কাজ সম্পর্কে আরো বিশদভাবে গবেষণা করা এবং তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা। এই ঘটনার ফলশ্রুতিতে ১৯৫৭ সালে প্রথম আন্তর্জাতিকভাবে নিউইয়র্কে মর্ডার্ন আর্ট মিউজিয়াম-এ প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৭৬ সালে তার মৃত্যুর ৫০তম বার্ষিকীতে স্পেনের বৈদেশিক মন্ত্রণালয় গাউদি সম্পর্কিত এক প্রদর্শনীর আয়োজন করে এবং তার কাজ সমগ্র বিশ্ব ভ্রমণ করে।[৫৬]

১৯৫০ থেকে ১৯৬০ সালের মধ্যে জর্জ আর. কলিন্স, নিকোলাস পিভনার এবং রবার্টো পানে গবেষণা ও লেখনীর মাধ্যমে গাউদির কাজের নব্য সচেতনতা ছড়িয়ে দেন, যেখানে তার জন্মভূমিতে আলেকজান্ড্রে সিরিসি, জুয়ান এডুয়ার্ডো সির্লট ও ওরিওল বোহিগাস কর্তৃক এটি প্রশংসিত হয় এবং প্রচারকৃত হয়। গাউদির কাজ এরপর থেকেই আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয় যেমন জাপানে কেনজি ইমাই, তোকুতোশি তোরি তার উল্লেখজনক কাজগুলোর প্রকাশ করেন। স্থাপত্য ও নকশার ক্ষেত্রে গাউদির অবদান ১৯৮৪ সালে গাউদির কাজগুলো ইউনেসকো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান করায় চরম মাত্রায় পৌছায়।[৫৭] গাউদির ধরন এরপরে সান্তিয়াগো কালাত্রাভা[৫৮]নরম্যান ফোস্টার-এর মত স্থাপত্যবিদকেও অণুপ্রাণিত ও প্রভাবিত করে।[৫৯]

গাউদির একনিষ্ঠ ধর্মচেতনা এবং তপস্বী জীবনের জন্য বার্সেলোনার সর্বোচ্চ মার্গের দেবদূত রিকার্ড মারিয়া ক্ররলেস ১৯৯৮ সালে গাউদির সৌন্দর্যচেতনার প্রস্তাব রাখেন। তার সৌন্দর্যচেতনা ভ্যাটিকান কর্তৃক ২০০০ সালে স্বীকৃত হয়।[৬০] গাউদির জন্মের সার্ধশততমবার্ষিকীতে বেশকিছুসংখ্যক অফিশিয়াল অণুষ্ঠান, কনসার্ট, শো এবং সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং বেশকিছু বই প্রকাশিত হয়েছিল। ঐ বছরের ২৪শে সেপ্টেম্বর মিউজিক্যাল গাউদির প্রিমিয়ার হয় পালায় দেলস এসপোর্টস দে বার্সেলোনায়। এই অংশের লেখক ছিলেন জোর্ডি গ্যালসেরান, এস্তেভে মিরালেস এবং আলবার্ট গুইনোভার্ট।[৬০] ২০০৮ সালে তার সম্মানে গাউদি অ্যাওয়ার্ড দেয়া শুরু করা হয়। কাতালান ফিল্ম একাডেমী কর্তৃক আয়োজিত এ অ্যাওয়ার্ডটি বর্ষসেরা কাতালান চলচ্চিত্রকে দেয়া হয়।[৬১] তার সম্মানে একটি ইবেরিয়া এয়ারবাস এ৩৪০-৬৪২, ইসি-আইএনও এর নামকরণ করা হয়েছিল।

বিশ্ব ঐতিহ্য

১৯৮৪ সালে ইউনেসকো গাউদির কিছু কাজকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান বলে ঘোষণা দিয়েছেঃ[৯] দ্য পার্ক গুয়েল, দ্য পালাউ গুয়েল এবং দ্য কাসা মিলা; ২০০৫ সালে[১০] দ্য নেটিভিটি ফ্যাকাড, দ্য ক্রিপ্ট এবং দ্য আপসে অফ দ্য সাগার্ডা ফ্যামিলিয়া, দ্য কাসা ভিসেন্স এবং বার্সেলোনার দ্য কাসা বাৎলো সেই সাথে সান্তা কলোমা দে কার্ভেলোর দ্য ক্রিপ্ট অফ কলোনিয়া গুয়েল।

গাউদির কাজকে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেবার উদ্দেশ্য হল তার অনন্য আন্তর্জাতিক কাজের মূল্য দেয়া।ঘোষণা অনুযায়ী:[১১]

  • ঊনবিংশ শতকের শেষ দিকে এবং বিংশ শতকের গোড়ার দিককার অ্যান্টনি গাউদির কাজ স্থাপত্যকলা ও ভবন নির্মাণের উন্নয়নে এক ব্যতিক্রমী এবং অনন্য সৃজনশীল অবদান।
  • গাউদির কাজ ঘনিষ্ঠভাবে তাঁর সময়ের সাংস্কৃতিক ও শৈল্পিক স্রোত যুক্ত মূল্যবোধের সাথে সম্পৃক্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ অদলবদল প্রদর্শন, যা কাতালোনিয়ার এল মডার্নিজম [সিক]কেই প্রতিনিধিত্ব করে। এটি বিংশ শতকের আধুনিক নির্মাণের সাথে যুক্ত অনেক ধরণকেও প্রত্যাশিত ও প্রভাবিত করেছে।
  • গাউদির কাজ বিংশ শতকের গোড়ার দিকের ভবন নির্মাণের অসাধারণ ধারাবাহিক উদাহরণকে প্রতিনিধিত্ব করে। বাসস্থানের হোক, বা সরকারি কোন স্থাপনা, তিনি যে উন্নয়ন করেছেন তা এক তাৎপর্যবাহী এবং সৃজনশীল অবদান।

কাজ

নিচের তালিকায় গাউদির কাজগুলো উল্লেখিত হলঃ[৬২]

আস্টোর্গা

বছরনামঅবস্থানবিবরণরাষ্ট্রছবি
১৮৮৯-১৮৯৩আস্টোর্গা এর এপিসকোপাল প্রাসাদবিশপ গ্রাউ দ্বারা বিশেষিত কাজ, যার সাথে তিনি তারাগোনার বিশপের এলাকায় থাকাকালীন পরিচিত হন।তারাগোনার বিশপের এলাকাসঠিক (কারেক্টে)
বছরনামঅবস্থানবিবরণরাষ্ট্রছবি
১৮৮৩-১৮৮৮কাসা ভিসেন্স২৪ সি/ক্যারোলিনসম্যানুয়েল ভিসেন্স ই মন্টানের কর্তৃক নির্মিত বিচ্যূত ঘরসঠিক (কারেক্টে)
১৮৮৪-১৮৮৭ফিন্সা গুয়েল১৫ (হল) এভি পেড্রালবেস
এভি ত্রয়োবিংশ জোয়ান, ২৭-৩১ (পূর্ব গেট)
সি/ মার্টি ই ফ্রাঙ্গুয়েস, ২-১২ (দক্ষিণ গেট)
এভি তির্যক, ৬৮৬ (উৎস এবং পেড্রালবেস প্রাসাদের মধ্যে বাগানে আলোছায়া,)
ইউসেবি গুয়েল গাউদিকে কোর্ট ও সারিয়ার মধ্যের খামারের বেশ কিছু কাজ সম্পাদনের দায়িত্ব অর্পণ করেন। কাজটি তিনটি গেটের মাধ্যমে সুরক্ষিত করা হয় (গুয়েল প্যাভিলিয়নে, এখন ফার্মাসি ও জীববিজ্ঞান ইউবি অণুষদের অবস্থিত) এবং গোল আস্তাবল (প্যাভিলিয়ন), একটি গাজেবো, একটি ঝর্ণা এবং ছায়া (পেড্রালবেস প্রাসাদের বাগান) এবং বাড়ির-আবাসস্থলের চ্যাপেল। (অদৃশ্য)সঠিক (কারেক্টে)


১৮৮৪-১৯২৬সাগ্রাডা ফামিলিয়াপিসিএ. সাগার্ডা ফ্যামিলিয়ালা সাগ্রাডা ফামিলিয়া প্রসারণ জেলার মধ্যে এই গির্জা অবস্থিত। কাতালান আধুনিকতার শ্রেষ্ঠ পরিচিত উদাহরণ, যা বিশ্ব ঐতিহ্য স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়.সঠিক (কারেক্টে). নির্মাণ
১৮৮৫-১৮৮৯পালাউ গুয়েলসি/নউ দে লাঁ রাম্বলাগাউদির পৃষ্ঠপোষক ইউসেবি গুয়েল দ্বারা বিচ্যূত বিশেষিত ঘর।সঠিক (কারেক্টে)
১৮৮৮-১৮৯০কোল-লেগি দে লেস তেরেসিয়ানেসসি/গ্যান্ডুক্সার ৮৫সঠিক (কারেক্টে)
১৯০০কাসা কালভেটসি/ কাস্প ৪৮বিল্ডিং একটি টেক্সটাইল প্রস্তুতকারকের দ্বারা তৈরি এবং উপরের মেঝের উপর অবস্থিত, একতলা এবং এর বুনিয়াদ বরাদ্দ ছিল, যা ব্যবসা এবং ঘরের জন্য-এ উভয় কাজ করেছিলো।সঠিক (কারেক্টে)
১৯০০-১৯০৯মিরালেসের গেট ও বেড়া বিল্ডিংপিজি দে ম্যানুউয়েল জিরোনা, ৫৫-৫৭হেরমেঙ্গেজিল্ডো মিরালেস-এর এস্টেট ওয়াল এবং গেট।ভাল
১৯০০-১৯১০পার্ক গুয়েলসি/ওলোট এস/এনকমিউনিটি উন্নয়নমূলকসহ একটি পাবলিক পার্কে বিলাসবহুল প্রকল্প যা প্রথম বিশ্বযুদ্ধ দ্বারা কিছুটা পণ্ড হয়েছিল।সঠিক (কারেক্টে)
১৯০৫-১৯০৭কাসা বাৎলোপিজি দে গ্রাসিয়া, ৪৩টেক্সটাইল শিল্পে জোসেপ বাৎলো কাসানোভাস দ্বারা বিশেষিত ১৮৭৭ সালে নির্মিত একটি ভবন, রিমডেলিং।সঠিক (কারেক্টে)
১৯০৬-১৯১০কাসা মিলাপিজি অণুগ্রহেসঠিক (কারেক্টে)
১৯০৮-১৯০৯এসকোলেস দে লাঁ সাগার্ডা ফ্যামিলিয়াপিকা সাগার্ডা পরিবারনিয়মিত

কোমিলাস (ক্যান্টাব্রিয়া)

বছরনামঅবস্থানবিবরণরাষ্ট্রছবি
১৮৮৩এল ক্যাপরিচোকোমিলাসের মার্কুইসের ভাই ম্যাক্সিমো দিয়াজ দে কুইজানো দ্বারা বিশেষিত ওরিয়েন্টাল হাউস.সঠিক (কারেক্টে)

লাঁ পোবলে দে লিলেট

বছরনামঅবস্থানবিবরণরাষ্ট্রছবি
১৯০৫-১৯০৬জার্দিনস আর্টিগাসজোয়ান আর্টিগাস দ্বারা পরিকল্পিত বাগান ই অ্যালার্ট।সঠিক (কারেক্টে)
১৯০৫জালেট দেল কাটলারাসভিলা কারখানার প্রকৌশলীদে আসল্যান্ড ঘর নির্মিত.সঠিক (কারেক্টে)

লিও

বছরনামঅবস্থানবিবরণরাষ্ট্রছবি
১৮৯১-১৮৯২কাসা বোটিনেসপিসিএ. দে সান মার্সেলোআসল নাম "হাউজ আন্দ্রেজ ফার্নান্দেজ" এবং "উসেবি গুয়েল" সম্পর্কিত একটি টেক্সটাইল বণিক লায়ন দ্বারা কমিশন লাভ করেন।সঠিক (কারেক্টে)

মাতারো

বছরনামঅবস্থানবিবরণরাষ্ট্রছবি
১৮৭৮-১৮৮৩কো-অপারেটিভা ওব্রেরা মাতারোনেসারাস্তায় যারা ​​আইটেম কোডিনার সাথেই নামকরণ করা হয়েছে সমবায় স্ট্রিট।পো. ২০০৮ সালে পুনঃসংস্কারকৃত

মনিস্ট্রোল দে মন্টসেরাট

বছরনামঅবস্থানবিবরণরাষ্ট্রছবি
১৯০৩-১৯১৬প্রিমের মিস্টেরি দে গ্লোরিয়া দেল রোজারি মনুমেন্টাল দে মন্টসেরাটসান্টা কোভা দে মন্টসেরাট-এর পথভাল

সান্টা কলোমা দে কার্ভেলো

বছরনামঅবস্থানবিবরণরাষ্ট্রছবি
১৯০৮-১৯১৪ক্রিপ্টা দে লাঁ কলোনিয়া গুয়েলকলোনিয়া গুয়েল, রিজাখ রাস্তার এস/এন১৮৯৮-এর দলগুলোর মৃত্যুদন্ডের প্রকল্প কার্যকরের হল ও সমাধিগৃহভাল

সিতজেস

বছরনামঅবস্থানবিবরণরাষ্ট্রছবি
১৮৯৫-১৯০১সেলার গুয়েল গ্যারাফসি-২৪৫-কি.মি. ২৪, ৫ওয়্যারহাউস এবং ফান্ডের ব্যবস্থাধীনে বর্তমানে এটি একটি রেস্টুরেন্টের অংশভাল

টীকা

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী