অলোক কাপালি

বাংলাদেশী ক্রিকেটার

অলোক কাপালি (জন্ম: জানুয়ারি ১, ১৯৮৪) একজন বাংলাদেশী সাবেক আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। তিনি একজন অলরাউন্ডার, যিনি ডানহাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ও ডানহাতি লেগ ব্রেক বোলার। তিনি প্রথম বাংলাদেশি বোলার হিসেবে টেস্ট ও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হ্যাটট্রিক করেন।[১] তিনি ২০০২ থেকে ২০১১ পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটে অংশ নেন। ২০০৮ সালে বিতর্কিত আইএসএল-এ অংশ নেওয়ার জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। পুনরায় ফিরে ২০১১ পর্যন্ত জাতীয় দলে খেলেন। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে ২০১২ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত বিভিন্ন দলের হয়ে খেলেছেন। ২০১৫ সালে তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স দলের হয়ে শিরোপা ও সেরা খেলোয়াড়ের খেতাব জিতেন। আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি খেলার বাইরে ২০০৬-০৭ মৌসুম থেকে তিনি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলেছেন। ২০২২ সালে তিনি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট থেকে অবসর নেন।

অলোক কাপালি
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
অলোক কাপালি
জন্ম (1984-01-01) ১ জানুয়ারি ১৯৮৪ (বয়স ৪০)
সিলেট, বাংলাদেশ
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি ব্যাটসম্যান
বোলিংয়ের ধরনলেগ ব্রেক
ভূমিকাঅলরাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৬)
২৮ জুলাই ২০০২ বনাম শ্রীলঙ্কা
শেষ টেস্ট২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ বনাম শ্রীলঙ্কা
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৫৭)
৪ আগস্ট ২০০২ বনাম শ্রীলঙ্কা
শেষ ওডিআই৬ ডিসেম্বর ২০১১ বনাম পাকিস্তান
ওডিআই শার্ট নং১৪
টি২০আই অভিষেক
(ক্যাপ ১২)
১ সেপ্টেম্বর ২০০৭ বনাম কেনিয়া
শেষ টি২০আই২৯ নভেম্বর ২০১১ বনাম পাকিস্তান
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০০-বর্তমানসিলেট বিভাগ
২০১২সিলেট রয়্যালস
২০১৩বরিশাল বার্নার্স
২০১৫কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স
২০১৬খুলনা টাইটান্স
২০১৭-২০১৯সিলেট সিক্সার্স
২০১৯-২০২০রাজশাহী রয়্যালস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতাটেস্টওডিআইএফসিএলএ
ম্যাচ সংখ্যা১৭৬৯১৭২২৪৩
রানের সংখ্যা৫৮৪১,২৩৫৯,১৩৮৫,০২৩
ব্যাটিং গড়১৭.৬৯১৯.৬০৩৩.৮৪২৫.২৪
১০০/৫০০/২১/৫২০/৩৭৪/২২
সর্বোচ্চ রান৮৫১১৫২২৮১১৫
বল করেছে১,১০৩১,৪৫২১৪,১৯৪৬,৫৫৫
উইকেট২৪২১৭১৬১
বোলিং গড়১১৮.১৬৫২.২৯৩২.৫৬৩২.২২
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট--
সেরা বোলিং৩/৩৩/৪৯৭/৩৩৫/৪৪
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং৫/–২৯/–১৪৪/–১০১/–
উৎস: ক্রিকেট আর্কাইভ, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩

প্রারম্ভিক জীবন এবং পটভূমি

অলোক কাপালি বাংলাদেশের সিলেটে একটি বাঙালি হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবারে ছয় ভাই ও চার বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট। তার বাবা তার নিজ শহর সিলেটে একটি হিন্দু মন্দিরে কাজ করতেন।[২]

আন্তর্জাতিক

টেস্ট

২০০২ সালে কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কাপালির টেস্ট অভিষেক হয়। সেই ম্যাচে তিনি ব্যাট হাতে ৩৯ ও ২৩ রান করার পাশাপাশি ২ উইকেট শিকার করেন । তার পরের ১৬ টেস্টে তিনি আরও ৪টি উইকেট নেন। এর মধ্যে ২০০৩ সালের ২৯ আগস্ট পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে পরপর তিন বলে শাব্বির রহমান, দীনেশ ক্যানেরিয়া ও উমর গুলকে আউট করে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে হ্যাট-ট্রিক অর্জন করেন।[১]

ব্যাট হাতে কাপালি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে চট্টগ্রামে তার সর্বোচ্চ ৮৫ রান করেছেন।

কাপালি বাংলাদেশের হয়ে তার ১৭টি টেস্ট ম্যাচের সবকটিতেই হেরেছেন।[৩] ২০০৬ সালের পর আর টেস্ট খেলার সুযোগ হয়নি।[৪]

একদিনের আন্তর্জাতিক

একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিনি দলের ভেতরে এবং বাইরে ছিলেন, বলের চেয়ে ব্যাট দিয়েই বেশি মুগ্ধ করেছেন। ২০০৮ সালের এশিয়া কাপের সময় ভারতের বিপক্ষে একটি ম্যাচে বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের দ্বারা দ্রুততম (৮৬ বলে ) সেঞ্চুরি করেন।[৫] দুই বছর পর সাকিব আল হাসান তার এই রেকর্ড ভাঙ্গে।[৬] ২০০৬ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে করা খালেদ মাসুদের সাথে ৮৯ রানের বাংলাদেশী রেকর্ড ৭ম উইকেট জুটি গড়েন।

জাতীয় দলের হয়ে সবশেষ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি খেলেছেন ২০১১ সালে।[৪]

ঘরোয়া ক্রিকেট

কাপালি ২০০৬-০৭ সালের বাংলাদেশী জাতীয় ক্রিকেট লীগে সিলেটের হয়ে ৩টি সেঞ্চুরি করেছিলেন এবং ৭৪৪ রানের সাথে শেষ করেছিলেন।[৭]

তিনি ২০১৬-১৭ জাতীয় ক্রিকেট লিগ প্রতিযোগিতার ফাইনাল ম্যাচে কেরিয়ার-সেরা ২০০ অপরাজিত ৫৯৮ রান সহ শীর্ষস্থানীয় রানকারী ছিলেন।[৮][৭]

২০১৮ সালে, তিনি ২০১৭-১৮ বাংলাদেশ ক্রিকেট লীগে মধ্যাঞ্চল ক্রিকেট দলের বিরুদ্ধে পূর্বাঞ্চলের হয়ে ব্যাটিং করে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তার ২০তম সেঞ্চুরি করেন।[৯]

২০২২ সালের ২৯ আগস্ট তিনি প্রথম শ্রেনির ক্রিকেট থেকে অবসর নেন।[৪]

আইসিএল ক্যারিয়ার

২০০৮ সালে, কাপালিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার জন্য ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল কারণ তিনি অ-অনুমোদিত ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লীগে যোগ দিয়েছিলেন এবং ইন্ডিয়ান ক্রিকেট লিগে ঢাকা ওয়ারিয়র্সের হয়ে খেলেছিলেন । আইসিএলের দুই মৌসুমে হায়দরাবাদ হিরোসের বিপক্ষে ৬০ বলে ১০০ রানের মাধ্যমে প্রথম সেঞ্চুরি করেন। তিনি ৮ ম্যাচে ৫৪ গড়ে ৩২৪ রান করে লিগ পর্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার হিসেবে সমাপ্ত হন। তবে কাপালি জুন ২০০৯ সালে আইসিএল ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা দেন এবং ৩১ ডিসেম্বর ২০০৯ এর পর আবারো বাংলাদেশের জাতীয় দলের হয়ে খেলার জন্য নির্বাচিত হন।[১০]

বিপিএল ক্যারিয়ার

২০১২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ৬টি দল নিয়ে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগের টুয়েন্টি২০ প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। বিসিবি প্রতীকি খেলোয়াড় হিসেবে তাকে সিলেট রয়্যালস দলে নির্বাচিত করে।[১১] ঐ প্রতিযোগিতার ৯ খেলায় তিনি সর্বমোট ১২৪ রান করেছিলেন।[১২]

পরবর্তীতে তিনি বেশ কয়েকটি বিপিএল দলের হয়েও খেলেন, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে ২০১৫-১৬ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ফাইনাল ম্যাচে তিনি সেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন।[১৩]

২০১৮ সালের অক্টোবরে, ২০১৮-১৯ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের খসড়ার পর তাকে সিলেট সিক্সার্স দলে রাখা হয়েছিল।[১৪] ২০১৯ সালের নভেম্বরে, তিনি ২০১৯-২০ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে রাজশাহী রয়্যালসের হয়ে খেলার জন্য নির্বাচিত হন।[১৫]

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী