অতিনবতারা

নক্ষত্রের জীবদ্দশায় শেষ বিস্ফোরণ

অতিনবতারা ([Supernova সুপারনোভা] ত্রুটি: {{Lang-xx}}: text has italic markup (সাহায্য)) হলো এক ধরনের নাক্ষত্রিক বিস্ফোরণ যার ফলশ্রুতিতে নক্ষত্র ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং অবশেষরূপে থাকে নিউট্রন তারা কিংবা কৃষ্ণবিবর।পুটকিসূর্যের চেয়ে ৮-১৫ গুণ বেশি ভরের নক্ষত্রসমূহের অভ্যন্তরে pasa হাইড্রোজেনের সংযোজন বিক্রিয়ায় তৈরি হয় হিলিয়াম, হিলিয়ামের সংযোজনে তৈরি হয় কার্বন এবং সেই কার্বনের সংযোজনে তৈরি হয় লোহা। লোহা তৈরির মধ্য দিয়ে কেন্দ্রীণ বিক্রিয়াসমূহের পরম্পরার পরিসমাপ্তি ঘটে, কারণ এর পরের বিক্রিয়াটি তাপশোষী। এমনই এক সময়ে নক্ষত্রের অভ্যন্তরস্থ বহির্মুখী চাপ যথেষ্ট পরিমাণ কমে যাওয়ায় এটি আর মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বলকে ঠেকিয়ে রাখতে পারে,ফলে নক্ষত্রে ঘটে এক প্রচণ্ড অন্তস্ফোটন (Implosion)। নক্ষত্রটির বেশিরভাগ ভরই এর কেন্দ্রে সংকুচিত হয়ে পড়ে, আর গ্যাসীয় বাতাবরণটি ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রবলবেগে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনাই অতিনবতারা বিস্ফোরণ হিসেবে পরিচিত। এই ধরনের বিস্ফোরণে বিপুল পরিমাণ শক্তি নির্গত হয় এবং সংশ্লিষ্ট নক্ষত্রটি সাময়িকভাবে পুরো ছায়াপথের চেয়েও বেশি উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

অতিনবতারা বিস্ফোরণকে নিষ্ক্রান্ত গ্যাসীয় পদার্থসমূহে উপস্থিত হাইড্রোজেনের পরিমাণের ভিত্তিতে ২ ভাগে ভাগ করা হয় --- নির্গত পদার্থ হাইড্রোজেন-সমৃদ্ধ হলে ধরন-২ আর হাইড্রোজেনের পরিমাণ অল্প হলে ধরন-১। অনেক অনেক আগে থেকেই মানুষ অতিনবতারা সম্পর্কে জানত। ১০৫৪ খ্রীষ্টাব্দে চীনা জ্যোতির্বিদেরা একটি অতিনবতারা দেখেছিলেন বলে উল্লেখ পাওয়া যায়। সাম্প্রতিককালে বৃহৎ ম্যাজেলানীয় মেঘে (LMC) SN1987A নামের যে অতিনবতারাটির বিস্ফোরণ সংঘটিত হয়েছে, তা প্রায় খালি চোখেই দেখা গিয়েছিল। অতিনবতারার বিস্ফোরণে অনেক ভারী মৌলিক পদার্থ তৈরি হয়ে ছায়াপথে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

কেপলারের অতিনবতারার অবশেষ, একটি বহু তরঙ্গ দৈর্ঘ্য রঞ্জন-রশ্মি চিত্র (চন্দ্র রঞ্জন-রশ্মি মানমন্দির)

নামকরণ

ব্যুৎপত্তি

অতিনবতারার ইংরেজি প্রতিশব্দ সুপারনোভা শব্দের বহুবচন রূপ আছে supernovae /-v/ অথবা supernovas এবং প্রায়ই সংক্ষেপে SN বা SNe বলা হয়। এটি ল্যাটিন শব্দ নোভা থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ "নতুন"। নোভা দ্বারা খ-গোলকে অবস্থিত এমন তারাদেরকে বুঝায় যাদেরকে অতি উজ্জ্বল দেখায়। নোভার সাথে সুপার নামীয় উপসর্গটি যোগ হয় সুপারনোভা হয়েছে যা একই সাথে নোভা এবং সুপারনোভার পার্থক্যটি চিহ্নিত করে দিচ্ছে। সুপারনোভা বলতেও ক্রমশ উজ্জ্বলতর হচ্ছে এমন তারাকে বুঝায়, কিন্তু এক্ষেত্রে তারার উজ্জ্বলতার কারণ এবং প্রক্রিয়া একেবারে ভিন্ন। সুপারনোভা শব্দটি তৈরি করেছিলেন ভাল্টার বাডে এবং ফ্রিৎস জুইকি, যিনি ১৯৩১ সালে জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান বক্তৃতায় এটি ব্যবহার শুরু করেছিলেন।[১] একটি জার্নাল নিবন্ধে এর প্রথম ব্যবহার নাট লুন্ডমার্ক এর একটি প্রকাশনায় এসেছিল। [২] মেরিয়াম-ওয়েবস্টার্‌স কলেজিয়েট অভিধান থেকে পাওয়া তথ্যানুসারে সুপারনোভা শব্দটি ১৯২৬ সালে প্রথম ব্যবহৃত হয়। সুপারনোভার বাংলা করা হয়েছে অতিনবতারা। স্পষ্টতই নবতারার সাথে অতি উপসর্গ যুক্ত হয়েছে এটির উৎপত্তি ঘটেছে। নবতারা বলতে নোভাকে বুঝায়।

অতিনবতারাসমূহের নামকরণ নীতিমালা

এনজিসি ৪৫২৬ ছায়াপথে অবস্থিত এসএন ১৯৯৪ডি নামক অতিনবতারা (নিচের বামদিকে অবস্থিত উজ্জ্বল দাগ)। নাসা, এসা, হাবল কি প্রকল্পের দল এবং হাই-জেড অতিনবতারা অনুসন্ধান দল কর্তৃক তোলা ছবি।

নতুন অতিনবতারা আবিষ্কৃত হলে তার তথ্য ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন-এর সেন্ট্রাল ব্যুরো ফর অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল টেলিগ্রাম্‌স শীর্ষক বিভাগে প্রেরিত হয়। উক্ত বিভাগ একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অতিনবতারাটির নামসহ তার বর্ণনা প্রচার করে। অতিনবতারাটি আবিষ্কারের বছর এবং তার পরে এক বা দুই বর্ণের একটি নির্দেশক দ্বারা নামকরণ করা হয়। এক বছরে আবিষ্কৃত প্রথম ২৬টি অতিনবতারার নামে নির্দেশক হিসেবে ইংরেজি বর্ণমালার এ থেকে জেড পর্যন্ত বর্ণগুলোর বড়ো হাতের অক্ষর ব্যবহার করা হয়। এরপর ব্যবহৃত হয় জোড়ায় জোড়ায় ছোটো হাতের অক্ষর, যেমন: এএ, এবি ইত্যাদি।[৩] পেশাদার ও শৌখিন জ্যোতির্বিদরা বছরে প্রায় কয়েকশো পর্যন্ত অতিনবতারা খুঁজে পান। যেমন, ২০০৫ সালে ৩৬৭টি এবং ২০০৬ সালে ৫৫১টি অতিনবতারা আবিষ্কৃত হয়। উদাহরণস্বরূপ, ২০০৫ সালে আবিষ্কৃত সর্বশেষ অতিনবতারাটির নাম রাখা হয় এসএন ২০০৫এনসি যা দ্বারা বোঝা যায় এটি ২০০৫ সালে আবিষ্কৃত ৩৬৭তম অতিনবতারা।[৪]

ঐতিহাসিক অতিনবতারাগুলোর নামকরণের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র তাদের আবিষ্কারের বছরই ব্যবহার করা হয়, যেমন: এসএন ১৮৫, এসএন ১০০৬, এসএন ১০৫৪ (টাইকোর নবতারা) এবং এসএন ১৬০৪ (কেপলারের তারা)। ১৮৮৫ সালের আগে কোন বছর একাধিক অতিনবতারা আবিষ্কৃত হয় নি। সেই বছরও অবশ্য একটি অতিনবতারা আবিষ্কৃত হয়েছিল। কিন্তু ১৮৮৫ সাল থেকেই অতিনবতারার নামের সাথে বর্ণমালা নির্দেশক ব্যবহৃত হতে শুরু করে। যেমন এসএন ১৮৮৫এ, এসএন ১৯০৭এ ইত্যাদি। প্রকৃতপক্ষে ১৯৪৭ সাল পর্যন্তই একটির বেশি অতিনবতারা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই একটি হলেও নামের সাথে বর্ণমালা নির্দেশক ব্যভহৃত হওয়ার ঘটনা সর্বশেষে ঘটেছে এসএন ১৯৪৭এ নামক অতিনবতারার ক্ষেত্রে। নামের শুরুতে ব্যবহৃত "এসএন" একটি ঐচ্ছিক উপসর্গ।

পর্যবেক্ষণের ইতিহাস

কর্কট নীহারিকা, এসএন ১০৫৪ নামক অতিনবতারার সাথে সংশ্লিষ্ট একটি পালসার উইন্ড নীহারিকা

অবলোকিত প্রাচীনতম নীহারিকার নাম এসএন ১৮৫। চীনা জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ১৮৫ খ্রিষ্টাব্দে এটি অবলোকন করেছিল। ব্যাপকভাবে প্রথম নীহারিকা অবলোকন করা হয় ১০৫৪ সালে। চীনারাই সেবার এসএন ১০৫৪ নামক অতিনবতারাটি অবলোকন করেছিল। আকাশগঙ্গায় পর্যবেক্ষণকৃত সর্বশেষ অতিনবতারা দুটি ছিল এসএন ১৫৭২ এবং এসএন ১৬০৪। এই অতিনবতারাদ্বয়ের পর্যবেক্ষণ ইউরোপ মহাদেশে জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রসারে বিশেষ অবদান রেখেছিল। কারণ চাঁদ এবং গ্রহসমূহের বাইরে অবস্থিত মহাবিশ্বের অংশসমূহ অপরিবর্তনীয় বলে এরিস্টটল যে মতবাদের প্রসার ঘটিয়েছিলেন তার বিরুদ্ধে এগুলো ছিল যথোপযুক্ত প্রমাণ।[৫]

সম্প্রতি অনেক দূরে অবস্থিত তারার বিস্ফোরণের মাধ্যমে সৃষ্টি অতিনবতারা পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে ধর্তব্যের তুলনায় তাদের উজ্জ্বলতা বেশ কম। মহাবিশ্বের প্রসারিত হওয়ার বেগ যে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে, এই পর্যবেক্ষণ তার সপক্ষে ভালো প্রমাণ খাড়া করে।[৬][৭]

আবিষ্কার

অতিনবতারা একটি বিরল ঘটনা, আকাশগঙ্গার মতো ছায়াপথে প্রতি ৫০ বছরে সর্বোচ্চ একবার এটি ঘটতে দেখা যায়। তাই অতিনবতারা গবেষণার জন্য অনেকগুলো ছায়াপথকে একসাথে খুব সূক্ষ্ণভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। দূরের ছায়াপথে অতিনবতারা সংঘটন সম্বন্ধে সঠিকভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব নয়। যখন সেগুল আবিষ্কৃত হয় ততক্ষনে বিস্ফোরণ প্রক্রিয়া চলতে শুরু করে। তাই বৈজ্ঞানিক সত্যতার বিচারে এই পর্যবেক্ষণকে উত্তীর্ণ করাতে গেলে প্রতিটি অতিনবতারার সর্বোচ্চ উজ্জ্বল অবস্থার পর্যবেক্ষণ করতে হয়। সে কারণে সর্বোচ্চ উজ্জ্বলতায় পৌঁছানোর পূর্বেই প্রতিটি অতিনবতারা আবিষ্কার করা খুব প্রয়োজন। পেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের তুলনায় শৌখিন জ্যোতির্বিদদের সংখ্যা অনেক বেশি। শৌখিনরাই তাই অতিনবতারা আবিষ্কারের ক্ষেত্রে বেশি অবদান রেখেছে। অপেক্ষাকৃত নিকটবর্তী ছায়াপথগুলোকে আলোকীয় দূরবীনের সাহায্যে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে তারা এ আবিষ্কার সম্ভব করে তুলেছে। নতুন ছবিগুলোর সাথে আগের তোলা ছবিগুলোর তুলনা করার মাধ্যমে এ ধরনের পর্যবেক্ষণ করা যায়।

বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে অতিনবতারা শিকারের জন্য কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত দূরবীন এবং চার্জ কাপল্‌ড ডিভাইস তথা সিসিডি'র ব্যবহার অনেক বেড়ে গেছে। শৌখিন জ্যোতির্বিদদের কাছে এগুলো বেশ জনপ্রিয়। এর পাশাপাশি পেশাদার পর্যায়ে অতিনবতারা পর্যবেক্ষণের জন্য Katzman Automatic Imaging Telescope-এর মত সুবৃহৎ স্থাপনা নির্মিত হয়েছে। এছাড়া অধুনা সুপারনোভা আর্লি ওয়ার্নিং সিস্টেম (স্নিউজ - SNEWS)-এর মাধ্যমে নিউট্রিনো চিহ্নিত করে আকাশগঙ্গার অতিনবতারা বিস্ফোরণের আগাম সংবাদ লাভের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অতিনবতারা বিস্ফোরণের সময় প্রচুর পরিমাণে নিউট্রিনো তৈরি হয় এবং এই নিউট্রিনো আন্তঃনাক্ষত্রিক ধূলি, গ্যাস এবং মহাজাগতিক ধূলি দ্বারা বিক্ষিপ্ত বা শোষিত হয়ে যায় না।

অতিনবতারা বিস্ফোরণ সংক্রান্ত গবেষণাকে দুই শ্রেণীতে বিভক্ত করা যায়: অপেক্ষাকৃত নিকটবর্তী ঘটনাসমূহ পর্যবেক্ষণ এবং দূরবর্তী বিস্ফোরণসমূহ পর্যবেক্ষণ। মহাবিশ্ব প্রসারিত হওয়ার কারণে আমাদের থেকে দূরবর্তী কোন একটি জ্যোতিষ্কের ডপলার সরণ (লোহিত অপসারণ, লাল সরণ) এবং নিঃসরণ বর্ণালি জানা থাকলে এগুলোর মাধ্যমে তার দূরত্ব পরিমাপ করা যায়। গড় হিসেবে ধরলে, দূরবর্তী বস্তুর প্রসারণ বেগ নিকটবর্তী বস্তুর প্রসারণ বেগ থেকে বেশি হয়ে এবং সে কারণে দূরবর্তীগুলোর ক্ষেত্রে লাল সরণও অপেক্ষাকৃত বেশি হয়। তাই পরিশেষে অতিনবতারা অনুসন্ধান প্রক্রিয়া দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়, উচ্চ লাল সরণ এবং নিম্ন লাল সরণ। এক্ষেত্রে ধর্তব্য ব্যাপ্তিটি হচ্ছে z = ০.১ - ০.৩। যেখানে জেড দ্বারা বর্ণালির কম্পাঙ্ক পরিবর্তন পরিমাপকারী একটি মাত্রাহীন রাশি বুঝায়।[৮]

অতিনবতারার উচ্চ লাল সরণ পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে অতিনবতারার আলোক বক্ররেখা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এ পর্যবেক্ষণের কার্যকারিতা রয়েছে, এটি ব্যবহার করেই আদর্শ বা বিশেষভাবে পরিবর্তিত মোমবাতির মাধ্যমে হাবল ডায়াগ্রাম আঁকা যায়। এই ডায়াগ্রামের মাধ্যমে মহাজাগতিক ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব হয়। নিম্ন লাল সরণ গবেষণার ক্ষেত্রে অতিনবতারা বর্ণালিবীক্ষণ বেশ উপযোগী। অতিনবতারার পদার্থবিজ্ঞান এবং পরিবেশ বিষয়ক গবেষণার জন্য এই পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।[৯] নিম্ন রাল সরণ পর্যবেক্ষণ হাবল বক্ররেখার স্বল্প দূরত্ববিশিষ্ট প্রান্তটি ধারণ করে। বক্ররেখার এই অংশ আবার দৃশ্যমান ছায়াপথসমূহের ক্ষেত্রে দূরত্ব বনাম লাল সরণ ছক সৃষ্টি করে।[১০]

শ্রেণিবিভাগ

টাইপ IA সুপারনোভার গঠন

গবেষণার সুবিধার্থে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন অতিনবতারার বর্ণালিতে প্রাপ্ত ভিন্ন ভিন্ন রাসায়নিক মৌলের বিশোষণ রেখার উপর ভিত্তি করে এর শ্রেণিবিন্যাস করেছেন। এরকম বিভাজনের প্রথম বিষয় হচ্ছে, তার বর্ণালিতে হাইড্রোজেনের কারণে সৃষ্ট রেখা আছে কি নেই। তার বর্ণালিতে হাইড্রোজেন রেখা থাকলে তাকে "ধরন II" শ্রেণীতে ফেলা হয়, অন্যথায় তা হয় "ধরন I"-এর অন্তর্ভুক্ত। বর্ণালির দৃশ্যমান অংশের মধ্যে এ ধরনের হাইড্রোজেন রেখাকে বালমার সিরিজ বলা হয়। এই ধরনগুলোর মধ্যে আবার বিভাজন করা হয়। এই বিভাজনের ভিত্তি হচ্ছে, অন্য কোন মৌলের বিশোষণ রেখার উপস্থিতি এবং তাদের বর্ণালির আলোক বক্ররেখার আকার। অতিনবতারার আপাত মান বনাম সময় লেখকেই আলোক বক্ররেখা বলা হয়।[১১]

অতিনবতারা শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা
ধরনবৈশিষ্ট্যসমূহ
ধরন I
ধরন Iএহাইড্রোজেনের স্বল্পতা থাকে। সর্বোচ্চ উজ্জ্বল আলোর কাছাকাছি সময়ে ৬১৫.০ ন্যানোমিটারে একটি এককভাবে আয়নিত সিলিকন (Si II) রেখা প্রদর্শন করে।
ধরন Iবি৫৮৭.৬ ন্যানোমিটারে অ-আয়নিত হিলিয়াম (He I) রেখা এবং ৬১৫ ন্যানোমিটারের কাছাকাছিতে কোন শক্তিশালী সিলিকন বিশোষণ রেখা দেখায় না।
ধরন Iসিদুর্বল অথবা কোন হিলিয়াম লাইনই নেই এবং ৬১৫ ন্যানোমিটারের কাছাকাছিতে কোন শক্তিশালী সিলিকন বিশোষণ রেখা দেখায় না।
ধরন II
ধরন IIপিএর আলোক বক্ররেখায় একটি "প্লেটে" পৌঁছে
ধরন IIএলএর আলোক বক্ররেখায় একটি রৈখিক অবনতি দেখা যায়। (মান বনাম সময়ের ক্ষেত্রে রৈখিক)

দ্বিতীয় ধরনের অতিনবতারাকে আবার তাদের বর্ণালির প্রকৃতি অনুযায়ী বিভক্ত করা যায়। এ ধরনের প্রায় সব অতিনবতারাই বেশ বড়ো ব্যাপ্তির নিঃসরণ রেখা প্রদর্শন করে। এর মাধ্যমে হাজার কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ড পর্যন্ত প্রসারণ বেগ পরিমাপ করা যায়। অবশ্য ব্যতিক্রমী কিছু অতুনবতারার বর্ণালিতে নিঃসরণ রেখার ব্যাপ্তি থাকে সরু। এদেরকে "ধরন IIএন"-এর মধ্যে ফেলা হয় যেখানে এন দ্বারা "ন্যারো" তথা সরু বোঝায়।

কয়েকটি অতিনবতারা যেমন এসএন ১৯৮৭কে এবং এসএন ১৯৯৩জে তাদের ধরন পাল্টায়। তারা বিস্ফোরণের প্রথম দিকে হাইড্রোজেন বিশোষণ রেখা প্রদর্শন করলেও কয়েক সপ্তাহ বা মাসের ব্যাপ্তি শেষে তাদের মধ্যে হিলিয়াম বিশোষণ রেখার আধিক্য দেখা যায়। "ধরন IIবি" নামক শ্রেণীটি ঐ সকল অতিনবতারাকে অন্তর্ভুক্ত করে যারা সময়ের ব্যবধানে ধরন II এবং ধরন Iবি উভয় ধরনের বৈশিষ্ট্যই প্রদর্শন করে।

আরও দেখুন

  • অতিনবতারা অবশেষ
  • অতিনবতারা অবশেষসমূহের তালিকা
  • বামন নবতারা
  • শ্যাম্পেইন অতিনবতারা

তথ্যসূত্র

প্রাসঙ্গিক অধ্যয়ন

  • ক্রসওয়েল, কেন (১৯৯৬)। দ্য আলকেমি অফ দ্য হ্যাভেন্‌স: সার্চিং ফর মিনিং ইন দ্য মিল্কি ওয়ে। অ্যাংকর বুক্‌স। আইএসবিএন ০৩৮৫৪৭২১৪৫। —একটি জনপ্রিয় বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ।
  • Filippenko, Alexi V. (১৯৯৭)। "অতিনবতারার আলোকীয় বর্ণালী"। অ্যানুয়েল রিভিউ অফ অ্যাস্ট্রোনমি অআন্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স৩৫: ৩০৯–৩৫৫। ত্রুটি: খারাপ ডিওআই উল্লেখ করা হয়েছে! —aঅতিনবতারার বর্ণালি বিন্যাস সম্পর্কিত।
  • Takahashi, K.; Sato, K.; Burrows, A.; Thompson, T. A. (২০০৩)। "Supernova Neutrinos, Neutrino Oscillations, and the Mass of the Progenitor Star"Physical Review D68 (11): 77–81। ২০০৮-০৫-২৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৬-১১-২৮  |নিবন্ধ= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)—a good review of supernova events.
  • Hillebrandt, Wolfgang (অক্টোবর ২০০৬)। "How to Blow Up a Star"Scientific American295 (4): 42–49।  অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)

বহিঃসংযোগ

🔥 Top keywords: প্রধান পাতা২০২৪ আইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপতুফান (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)বিশেষ:অনুসন্ধানঈদুল আযহাঈদের নামাজকুরবানীরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরঈদ মোবারকক্লিওপেট্রাকোকা-কোলারাজকুমার (২০২৪-এর চলচ্চিত্র)এক্স এক্স এক্স এক্স (অ্যালবাম)বাংলাদেশমিয়া খলিফাআসসালামু আলাইকুমআবহাওয়া২০২৪ কোপা আমেরিকাদ্য কোকা-কোলা কোম্পানিইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউনউয়েফা ইউরো ২০২৪ওয়ালাইকুমুস-সালামসন্দীপ লামিছানেতানজিম হাসান সাকিববাংলা প্রবাদ-প্রবচনের তালিকানির্জলা একাদশীকাজী নজরুল ইসলামচন্দ্রবোড়াশাকিব খানঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরস্বামী বিবেকানন্দভারতমহাত্মা গান্ধীঐশ্বর্যা রাইবাংলা ভাষাআইসিসি পুরুষ টি২০ বিশ্বকাপবিশেষ:সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহমুহাম্মাদএকাদশী